আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিকেল বেলায় পার্কে একটা মনোরম সন্ধ্যা কল্পনা করুন- মৃদু বাতাস, ঢলে পড়া সূর্য, মাটির সোঁদা গন্ধ, আর হাতে চায়ের উষ্ণ পেয়ালা। চোখ বুজে একবার চুমুকের পরই কানে আসছে মশার ভোঁ ভোঁ শব্দ! এরপর আর ভাবার সময় মেলে না, সূঁচের মতো কাঁটা দেখলে গেঁথে গেল শরীরে। আবার অনেক সময়ে ভাবার সময়ে পেয়ে মশা গুলিরে মারতে গেলেও ফুরুৎ করে উড়ে যায়। ফলে হাতের চড় এসে পড়ে নিজের গায়ে! অথবা তা দু'হাতে তালি বেজে ওঠে। ভারতে এ ছবি প্রায় সর্বত্র।

তবে পৃথিবীতেই রয়েছে মশামুক্ত স্থানও। যেমন- আইসল্যান্ড। এ দেশেই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে কোনও ধরণের মশা নেই।

এছাড়া, আইসল্যান্ডে কোনও সাপ বা অন্যান্য সরীসৃপ নেই। সেই কারণেই আইসল্যান্ডকে কখনও কখনও "সাপমুক্ত দেশ" বলা হয়। 

সবচেয়ে মজার তথ্য হল- আইসল্যান্ডে হ্রদ, পুকুর, জলাভূমি এবং প্রায় ১৩০০ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। তবুও, মশা বেঁচে থাকে না। বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, আইসল্যান্ডের দ্রুত পরিবর্তনশীল আবহাওয়া এবং ঠান্ডা জলবায়ুতে মশা বাঁচে না। ফলে মশার ডিমের বৃদ্ধ বা  ডিম ফুটে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সুতরাং, আইসল্যান্ড শান্তিপূর্ণ - মশা নেই, সাপ নেই, কেবল পরিষ্কার, ঠান্ডা প্রকৃতি।

সাধারণভাবে, মশা প্রায়শই অগভীর, স্থির জলে বংশবৃদ্ধি করে। এইসবই মশার ডিম ফুটে লার্ভা তৈরি হওয়ার উপযুক্ত জায়গা। এই প্রক্রিয়া সাধারণত একটি উপযুক্ত এবং স্থিতিশীল তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। 

জল জমে থাকে না:
আইসল্যান্ডের পরিস্থিতি এর থেকে আলাদা। সেদেশে জমা জল বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। আইসল্যান্ডের প্রাকৃতিক নিষ্কাশন এবং দ্রুত প্রবাহমান ব্যবস্থার কারণে, জল মশার প্রজনন পরিবেশ তৈরি করার জন্য উপযুক্ত নয়।

কম জনসংখ্যার ঘনত্ব: 
আইসল্যান্ডে ঘরবাড়ির তুলনায় মানুষ এবং জায়গা উল্লেখযোগ্যভাবে কম, যার অর্থ হল মশার বংশবৃদ্ধির জন্য মানুষের তৈরি পরিবেশ প্রায় নেই। 

খুব কম তাপমাত্রা:
আইসল্যান্ডে, তাপমাত্রা মশার ডিম বা লার্ভার বেঁচে থাকার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে (আইসল্যান্ডে রেকর্ড করা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় -৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।

মশা জৈবিকভাবে এই পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকতে বা বংশবৃদ্ধি করতে অক্ষম। মজার বিষয় হল, আইসল্যান্ডে এমন একটি পোকা আছে যা দেখতে কিছুটা মশার মতো, কিন্তু আচরণ এবং প্রকৃতিতে একেবারেই আলাদা। সেই পোকা কামড়ায় না এবং রোগ ছড়ায় না। এই পতঙ্গ মশা নয়!