আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ বিভিন্ন দেশের উপর কড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ ধরে তা যদি ৫০ শতাংশ হয় তাহলে সুইৎজারল্যান্ডের উপরও ৩৯ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। আরও অন্যান্য দেশের উপরেও এই শুল্ক চাপিয়েছেন। যাতে বিরক্ত সব দেশই। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধি দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইজারল্যান্ড সরকার। সেই দলে থাকতে পারেন প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড় রজার ফেডেরার এবং ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনো।


এটা ঘটনা, বিদেশি পণ্যের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। তবু আমেরিকা বা ট্রাম্পকে চটাতে চাইছে না কোনও দেশ। আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের শুল্কের বোঝা কমানোর চেষ্টা করছে অধিকাংশ দেশ। ব্যতিক্রম নয় সুইজারল্যান্ডও। আলোচনার জন্য ফেডেরার এবং ইনফ্যান্টিনোকে সামনে রাখতে চাইছে সুইজারল্যান্ড প্রশাসন। ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিকের আলাদা কদর রয়েছে বিশ্বজুড়ে। আমেরিকাতেও তাঁর অসংখ্য ভক্ত রয়েছেন। ইনফ্যান্টিনো আবার ট্রাম্পের সুপরিচিত। ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেছেন ফিফা সভাপতি। তাই ট্রাম্পের মন গলাতে ফেডেরার এবং ইনফ্যান্টিনোকে ব্যবহার করতে চাইছে সুইজারল্যান্ড। তাঁরা দর কষাকষিতে নেতৃত্ব দেবেন না ঠিকই। তবু তাঁদের উপস্থিতি ইতিবাচক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডের পণ্যের উপর ৩৯ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে ওয়াশিংটন।

 

আরও পড়ুন:‌ ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এত কথা কেন?‌ বুমরার পাশে দাঁড়ালেন তাঁরই সতীর্থ 


সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট কারিন কেলার–সাটার বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিচিতরা তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতেই পারেন। এর মধ্যে আমরা আপত্তির কিছু দেখছি না।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘এটার মধ্যে কোনও আনুষ্ঠানিকতা নেই। এটা কোনও কৌশলও নয়। ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন সরকারি আধিকারিকরাই। পরিচিতদের উপস্থিতি আমাদের পক্ষে কতটা ইতিবাচক হবে, সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।’


তবে আমেরিকার শুল্ক নীতি নিয়ে অসন্তোষ গোপন করেননি সাটার। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যে কোনও শুল্ক মেনে নিতে পারি না। আমাদের ফেডারেল কাউন্সিলের সদস্যরা সমাধান খোঁজার এবং শুল্ক যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা করবেন। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে এক পক্ষকে অনেক বেশি শুল্ক দিতে হবে, এটা কিন্তু একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’


এদিকে, ফেডেরার এবং ইনফ্যান্টিনোকে শুল্ক বিষয়ক দর কষাকষির সরকারি প্রতিনিধি দলে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ সুইজারল্যান্ডেই। সে দেশের একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দল যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের বক্তব্য, ফেডেরারের মতো ক্রীড়াবিদকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে। তা ছাড়া, তিনি কি সত্যিই শুল্ক কমানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারবেন? একই প্রশ্ন উঠছে ফিফা সভাপতিকে ঘিরেও।

এদিকে, শুক্রবার লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে কৃষকদের হয়ে জোর সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির স্পষ্ট ঘোষণা, তাঁর সরকার কৃষকদের স্বার্থের সঙ্গে কখনও আপস করবে না, কারণ কৃষকরাই দেশকে ‘‌স্বয়ংসম্পূর্ণ’‌ করেছেন। বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অচলাবস্থার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর ‘‌কৃষক দরদ’‌ সম্ভবত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কৌশলী বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।