আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইস্ট রেনফ্রিউশায়ারের বাসিন্দা সারাহ গ্লেন (৩৯) নিজের জীবনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা সামনে এনে আলোচনায় এসেছেন। তিনি তাঁর পরিচয় গোপন রাখার আইনগত অধিকার থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে এসেছেন যাতে অন্য ধর্ষণ-অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীদের নীরব থাকতে না বাধ্য করতে পারে।

২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর স্বামী, ডেভিড ডিভাইন (৪৪), তাকে তাদের পারিবারিক বাড়িতেই ধর্ষণ করে। ঘটনাটি ঘটে বাসবির একটি বাড়িতে, যেখানে সারাহ নিজের সন্তানদের নিয়ে গিয়েছিলেন বন্ধুর আমন্ত্রণে। সেদিন বন্ধুটি তাঁর বাচ্চাদের  দেখতে উপরে গেলে সুযোগ নেয় ডিভাইন। সোফায় বসা অবস্থায় সারাহকে জোর করে চেপে ধরে সে ধর্ষণ করে। সারাহ বলেন, “আমি বারবার না বলছিলাম—মনে হচ্ছিল একশবার বলেছি—কিন্তু সে থামেনি। আমি চিৎকার করিনি কারণ ঘরে বাচ্চারা ছিল। আমার সারা শরীরে উত্তেজনা জাগিয়ে তুলতে থাকে।” বন্ধুটি যখন নিচে ফিরে আসে, তখন ভয়ঙ্কর দৃশ্যের মুখোমুখি হয়—ডিভাইন তখনও সারাহর উপর চেপে বসা। সঙ্গে সঙ্গে সে তাকে সরিয়ে দেয়।

এরপর আদালতে মামলা গড়ায়। এডিনবরার হাই কোর্ট ডিভাইনকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয়। রায় ঘোষণার পর সারাহ সাংবাদিকদের বলেন, “আমি আমার স্বামী থেকে আলাদা হয়েছিলাম, তখন মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। আমার বান্ধবী সান্ত্বনা দিতে আমাকে ডাকলো। আমি ভেবেছিলাম আমি নিরাপদ স্থানে যাচ্ছি, কিন্তু ওর স্বামী সুযোগ খুঁজে আমাকে ধর্ষণ করলো।”

আরও পড়ুন: স্ত্রী বলার পরেও 'ওইটা' আনতে ভুলে গিয়েছিলেন স্বামী, বর-শ্বশুরকে লাথি, বেল্ট দিয়ে বেধড়ক মার বউয়ের

তিনি আরও বলেন, “আমার জীবন ওলটপালট হয়ে গেছে। কিন্তু আদালতে যখন শাস্তি ঘোষণা হলো, তখন মনে হলো ন্যায়বিচার হয়েছে। আমি চাই অন্য ভুক্তভোগীরাও জানুক—চুপ থাকা সমাধান নয়। কথা বলতে হবে, নইলে অপরাধীরা আরও সুযোগ পাবে।” রেপ ক্রাইসিস স্কটল্যান্ড-এর প্রধান নির্বাহী স্যান্ডি ব্রিন্ডলি সারাহর সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “সারাহর মতো ভুক্তভোগীরা সাহস করে সামনে আসা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধর্ষণের মানসিক যন্ত্রণা একদিকে, আবার বিচার ব্যবস্থার জটিলতা অন্যদিকে—এই দুই মিলিয়ে ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায় পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। তবুও সারাহ যে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করেছেন, তা অন্য অনেককে অনুপ্রাণিত করবে।” সারাহ গ্লেনের এই পদক্ষেপ শুধু তাঁর জন্যই নয়, গোটা সমাজের জন্য এক শক্তিশালী বার্তা—ধর্ষণের বিরুদ্ধে নীরবতা নয়, প্রতিবাদই হোক অস্ত্র।