অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন নচিকেতা চক্রবর্তী। বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। আপাতত সামলে উঠেছেন গায়ক। ফিরেছেন বাড়িতে। তবে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই অতীতকে হাতড়ে দেখেছেন তিনি। জীবনে মৃত্যুকে ছুঁয়ে কতবার ফিরেছেন, দিলেন সেই খতিয়ানও। একটি অডিও পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরলেন সেই অজানা আখ্যান। নাম দিয়েছেন 

সেই অডিওয় নচিকেতা বলেন, “মৃত্যু মুখ থেকে বারংবার ফিরে মন্দ লাগছে না। প্রথমবার বাইক থেকে পড়ে মাথায় লেগে কোমায়। বয়স ১৫। দ্বিতীয়বার মানিকতলায় বাস ভাড়া বৃদ্ধির আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে পাশের কমরেডের মৃত্যু আমার বদলে। হঠাৎই স্থান পরিবর্তনের কারণে। তখন বয়স ২০। তৃতীয়বার পাতালরেলের নির্মিত পরিত্যক্ত টানেলে জলে ডুবতে ডুবতে। তখন বয়স ১৬। ক্ষুদিরাম ছবি দেখে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে বেঁচে যাওয়া। দড়িটা হঠাৎ ছিঁড়ে যাওয়ায়। বয়স তখন ৭।”

নকশাল আন্দোলনের সময় স্কুলে আগুন লাগিয়ে, দিল্লির হাসপাতালে কঠিন সার্জারির টেবিলে বা এবার কলকাতার বেসরকারি নার্সিংহোমে, নচিকেতার সঙ্গে মৃত্যুর সাক্ষাৎ হয়েছে বারবার। নচিকেতা জানান, সকলের সঙ্গে নিজের গল্প ভাগ করে নিতেই ফেলে আসা দিন ফিরে দেখা। তবে অহেতুক নেতিবাচক মন্তব্য চান না গায়ক। সে কথাও জানিয়েছেন স্পষ্টভাবেই। খানিক ব্যঙ্গের সুরে বলেন, “আমাকে তো আমার যা আয়ু, তার থেকে বেশি মারা হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আবারও বেঁচে এলাম। হয়তো ভুল হয়ে গিয়েছে। ক্ষমা করবেন। এবার আপনারা মৃত্যু ঘোষণা করলেই কথা দিচ্ছি মরে যাওয়ার চেষ্টা করব। অন্তত আপনাদের মান রাখতে।” এরপরেই নচিকেতার কণ্ঠে ভেসে এল নতুন সুর। গেয়ে উঠলেন ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি’।

গত সপ্তাহে শনিবার রাতে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন নচিকেতা। জানা গিয়েছিল, বুকে ব্যথা অনুভব করছিলেন তিনি। দেরি না করে তড়িঘড়ি তাঁকে বাইপাসের ধরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর পরীক্ষা করে দেখা যায় হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে শিল্পীর। খবর, নচিকেতার বুকে দু’টি স্টেন্ট বসানো হয়েছে। এখন একদম সুস্থ গায়ক। ফিরেছেন বাড়িতেও। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েই নিজের সুস্থতার খবর সমাজমাধ্যমে ভাগ করেছেন নচিকেতা। যে চিকিৎসকদের অধীনে ছিলেন তিনি, তাঁদের সঙ্গে ছবি ভাগ করে নচিকেতা লেখেন, ‘অবশেষে খাঁচা ভেঙে...।’

নচিকেতা যখন অসুস্থ হয়েছিলেন, তখন গায়কের সঙ্গে সমাজমাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করে অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘সুস্থ হয়ে ওঠো নচিদা।’ সেই সময় তাঁর কাছে গায়কের স্বাস্থ্যের খবর জানতে চাওয়া হয়েছিল। আজকাল ডট ইন-কে অভিনেতা বলেছিলেন, “নচিদার শরীরটা তো সত্যিই ভাল নেই। তার উপর পরপর শো ছিল। গানের অনুষ্ঠানে একটা প্রবল শারীরিক চাপ তো পড়েই।  আর এখন তো দূরে কোথাও অনুষ্ঠানও করতে চান না নচিদা। এই ধকলটা-ই শেষমেশ... কিন্তু এখন অবস্থা স্থিতিশীল। শুনলাম সব বিপদ কেটে গিয়েছে। ওই বেসরকারি হাসপাতালে নচিদা যেখানে ভর্তি, ওঁর পরিবারও রয়েছেন ওঁর রয়েছেন। আর নচিদা তো ফাইটার, তাই কিছু হবে না। দুর্ধর্ষ কামব্যাক করবে।”