আজকাল ওয়েবডেস্ক: "ভুলে যাওয়া রোগ" বলতে মূলত ডিমেনশিয়া স্মৃতিভ্রংশ রোগকে বোঝায়। এটি একটি অবস্থা যেখানে মানুষের স্মৃতিশক্তি, চিন্তাভাবনা এবং যুক্তিনির্ভর কাজকর্ম কমে যায়। ডিমেনশিয়া কোনো নির্দিষ্ট রোগ নয়, বরং এটি বিভিন্ন রোগের কারণে সৃষ্ট একটি সাধারণ লক্ষণগুচ্ছ, যার মধ্যে আলঝাইমার রোগ সবচেয়ে পরিচিত।
ডিমেনশিয়ার কিছু সাধারণ লক্ষণ:
স্মৃতিভ্রংশ: নতুন কিছু মনে রাখতে অসুবিধা হওয়া বা পুরনো ঘটনা ভুলে যাওয়া।
চিন্তাভাবনার সমস্যা: সিদ্ধান্ত নিতে বা সমস্যা সমাধানে অসুবিধা হওয়া।
ভাষা ব্যবহারে সমস্যা: কথা বলতে বা অন্যের কথা বুঝতে সমস্যা হওয়া।
ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন: মেজাজ পরিবর্তন হওয়া বা হতাশ হওয়া।
দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা: পোশাক পরতে, খেতে বা গোসল করতে সমস্যা হওয়া।
ডিমেনশিয়ার কারণ:
আলঝাইমার রোগ: ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ।
রক্তনালীর সমস্যা: মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি হলে ডিমেনশিয়া হতে পারে।
পার্কিনসন্স রোগ: এটিও ডিমেনশিয়ার একটি কারণ হতে পারে।
কিছু বিরল রোগ: ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া বা ক্রুটজফেল্ড-জ্যাকব রোগের মতো বিরল রোগও ডিমেনশিয়ার কারণ হতে পারে।
ডিমেনশিয়া নির্ণয়:
চিকিৎসকের পরামর্শ: ডিমেনশিয়া নির্ণয়ের জন্য একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
শারীরিক পরীক্ষা: ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা করে অন্যান্য রোগ শনাক্ত করতে পারেন।
জ্ঞানীয় পরীক্ষা: স্মৃতিশক্তি, ভাষা এবং অন্যান্য জ্ঞানীয় কার্যাবলী পরীক্ষা করা হয়।
ইমেজিং পরীক্ষা: মস্তিষ্কের গঠন এবং কার্যকারিতা দেখতে এমআরআই বা সিটি স্ক্যানের মতো পরীক্ষা করা যেতে পারে।
ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ:
নিয়মিত ব্যায়াম: শারীরিক কার্যকলাপ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
সুষম খাদ্য: স্বাস্থ্যকর খাবার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে।
মানসিক কার্যকলাপ: নতুন কিছু শেখা বা মস্তিষ্কের ব্যায়াম করা স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সহায়ক।
সামাজিক কার্যকলাপ: বন্ধু এবং পরিবারের সাথে সময় কাটানো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
মনে রাখা জরুরি যে, ডিমেনশিয়া একটি জটিল রোগ এবং এর চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের কারণ, রোগের তীব্রতা এবং ব্যক্তির সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর।
