আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা যখন তুঙ্গে সেই সময় কিরানা হিল এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এই এলাকায় পাকিস্তানের পারমাণবিক ঘাঁটি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও অনেকে দাবি করেছেন পারমাণু বোমা পরীক্ষার ফলে ওই কম্পন। যদিও পাকিস্তান দাবি করেছে যে এটি একটি সাধারণ ভূমিকম্প ছিল।
ওয়াশিংটন থেকে এমন একটি প্রতিবেদন সামনে এসেছে, যা বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের অবাক করে দিয়েছে। লস আলামোস ল্যাবের বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণায় বলেছেন, কিছু ভূমিকম্প আসলে গোপনে পরিচালিত পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যখন মাটি কাঁপে, তখন সেটি ভূমিকম্পের পাশাপাশি গোপন পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের ফলাফলও হতে পারে। এই দু’টির কম্পনের মধ্যে পার্থক্য করা খুব কঠিন। উন্নত প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও যদি ভূমিকম্প এবং পারমাণবিক বিস্ফোরণ একই সময়ে বা কাছাকাছি সময়ে ঘটে, তাহলে সেরা যন্ত্রগুলিকেও বোকা বানানো যেতে পারে।
গবেষণায় উত্তর কোরিয়ার উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। গত ২০ বছরে উত্তর কোরিয়া ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে। তারা যেসব জায়গায় এই পরীক্ষাগুলো চালিয়েছে, সেখানে ভূমিকম্প মাপার যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছিল। সেই যন্ত্রগুলি দেখিয়েছে যে, ওইসব এলাকায় ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়েই থাকে। এর থেকে বোঝা যায় যে, পারমাণবিক পরীক্ষা এবং ভূমিকম্পের কম্পন এতটাই এক যে আসলে কী ঘটেছে তা শণাক্ত করা কঠিন।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য জোশুয়া কারমাইকেল এবং তাঁর দল ভূমিকম্প তরঙ্গ (পি-তরঙ্গ এবং এস-তরঙ্গ) বিশেষ পদ্ধতিতে অধ্যয়ন করেছেন। তাঁরা এমন একটি কৌশল তৈরি করেছেন যা প্রায় ৯৭% সময় ১.৭ টনের লুকনো বিস্ফোরণকে সঠিকভাবে শণাক্ত করতে পারে। কিন্তু যদি ভূমিকম্প এবং বিস্ফোরণের কম্পন ১০০ সেকেন্ডের মধ্যে এবং ২৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ঘটে, তবে তাদের কৌশলটি কেবল ৩৭% সময় সফল।
এই গবেষণার সবচেয়ে বড় ফলাফল হল, যদি ভূমিকম্প এবং পারমাণবিক পরীক্ষার কম্পন মিলে যায়, তাহলে সেরা যন্ত্রকেও বোকা বানানো যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যেসব এলাকায় ঘন ঘন ভূমিকম্প হয়, সেখানে গোপনে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো এবং সেগুলো লুকিয়ে রাখা এখন আরও সহজ হয়ে উঠবে। এর অর্থ হল এটি বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের একটি নতুন বিষয়।
