আজকাল ওয়েবডেস্ক: তিরিশ কোটির চাকরি। স্বয়ং মিশরের ফ্যারাও এই আকাশছোঁয়া বেতন দিতে রাজিও ছিলেন। কিন্তু এমন 'লোভনীয়' চাকরি করতে রাজিই হননি কেউ। প্রশ্ন জাগতে পারে চাকরি করতে কেন রাজি হননি কেউ? 

 

 

আলেকজান্দ্রিয়ার ফ্যারোস দ্বীপে লাইটহাউজের কাজের জন্য কর্মী চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আকাশছোঁয়া বেতন দেওয়ার শর্ত দেওয়া হলেও মেলেনি উপযুক্ত কর্মী। চাকরি করার জন্য এগিয়ে আসেননি কেউ। 

 

 

কাজটা ছিল বেশ কঠিন। আলেকজান্দ্রিয়ার লাইটহাউজের আলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে দিনরাত। উত্তাল সমুদ্র দিয়ে চলাচল করে জাহাজ। সেই জাহাজকে আলো দেখাতে হবে। যাতে তারা দিগভ্রষ্ট না হয়। এই হল চাকরির শর্ত। কিন্তু বাতিঘরের চারপাশের ভয়াবহতা এবং চাকরির চরিত্রের জন্য পিছপা হতে হয়েছিল চাকরিপ্রার্থীকে। 

 

 

লাইটহাউজটির চারপাশে শুধু জল আর জল। মনুষ্য সমাজ থেকে পুরোদস্তুর বিচ্ছিন্ন এই বাতিঘর। সমুদ্রের মাঝখানে রয়েছে তা। যে কাজ করবেন, তাঁকে সম্পূর্ণ একাকী থাকতে হবে এই বাতিঘরে। জনমানসের দেখা পাওয়া যাবে না। এমন 'পাণ্ডববর্জিত' জায়গায় দিনের পর দিন, মাসের পর মাস কি কাজ করা যায়? 

 

 

প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য সাহসী হতে পারেননি কেউ। তীব্র সামুদ্রিক ঝড়ের মঝে একাকী দাঁড়িয়ে সেই বাতিঘর। অশান্ত সমুদ্রের বেপরোয়া ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে লাইটহাউজের শরীরে। কে কাজ করবে এমন ভয়ের জায়গায়! 

 

 

আকাশছোঁয়া বেতনের চাকরি হলেও নিঃসঙ্গ হয়েই কাটাতে হবে। সুখে-দুঃখে পাশে পাওয়া যাবে না কাউকেই। কেবলমাত্র কয়েকটি বিশেষ অনুষ্ঠানেই হয়তো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দেখা মিলবে। 'একাকীত্বের এমন আশীর্বাদ' কেউই উপভোগ করতে চাননি। 

 

 

আলেকজান্দ্রিয়ার এহেন বাতিঘরের এক ইতিহাস রয়েছে। আলেকজান্দ্রিয়ার কাছে এক নাবিক একবার সামুদ্রিক ঝড়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সমুদ্রে লুকনো পাথর ছিল। সেই পাথরে ধাক্কা লেগে ডাহাজ ডুবি হয়। 

 

 

প্রথম টলেমি তখন বাতিঘরের গুরুত্ব বুঝতে পারেন। তৈরি করা হয় এই বাতিঘর। সেখানে চাকরির জন্য তিরিশ কোটি বেতন দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু কেউই কাজ করার জন্য আসেননি। এখন অবশ্য স্বয়ংক্রিয় আলোর বন্দোবস্ত রয়েছে সেই বাতিঘরে। অশান্ত সমুদ্রে যা আলো দেখাচ্ছে জাহাজকে।