নিতাই দে, আগরতলা: ড্রাগসের সঙ্গে যুক্ত কাউকে রেয়াত না করতে পুলিশ ও অন্যান্য এজেন্সিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক মানিক সাহা। তিনি আরও জানালেন, ড্রাগস ধ্বংস ও বাজেয়াপ্ত করার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। ত্রিপুরায় ড্রাগসের ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও এখন ড্রাগসের প্রতি আসক্তি হচ্ছে। রাজ্য সরকার মাদকের নেশার বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি ড্রাগসের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ড্রাগস মাফিয়াদের জালে তোলার চেষ্টা চলছে। পুলিশ ও অন্যান্য এজেন্সিগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ড্রাগসের সঙ্গে যুক্ত কাউকে যাতে ছাড়া না হয়। ড্রাগসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় ড্রাগস ধ্বংসের পরিমাণ ১৩২% বেড়েছে। মাদক বাজেয়াপ্তের পরিমাণ বেড়েছে ১০৩ থেকে ১০৪%। মাদকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদেরও আরও সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলছেন, সেভাবে আমরাও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। 

 

মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, 'সবকিছু একদিনে ঠিক হয়ে যাবে, সেটা সম্ভব নয়। কারণ দীর্ঘ ৩৫ বছর এবং আরও ৫ বছরে কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসীরা যেসব কাজ ও কীর্তিকলাপ করে গেছে সেই আবহ কিন্তু এখনও রাজ্য থেকে চলে যায়নি। এজন্য অনেক সময় দরকার। তবু আমরা চাই সুন্দর একটা রাজ্য গড়তে। ভারত এখন অর্থনীতির দিক থেকে চতুর্থ স্থানে চলে এসেছে। যেটা আগে ছিল ১১তম স্থানে। জিএসডিপি এবং মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা।' 

 

আরও পড়ুন: আর মাখন খাওয়া হল না, দহি হান্ডি উৎসবে এই রাজ্যে শোকের ছায়া, মৃত একাধিক, আহত ১০০ ছুঁইছুঁই

 

শনিবার রাজধানী আগরতলার এডিনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অরবিন্দ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত এক স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বলেন, 'রক্তদানে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের তুলনায় অনেক ধাপ এগিয়ে রয়েছে ত্রিপুরা। রক্তদানের চাইতে মহৎ দান কিছু হতে পারে না। আমরা বস্ত্রদান, অর্থদান, অন্নদান, শিক্ষাদান সহ বিভিন্ন দান করতে পারি। কিন্তু রক্তদান এমন একটা দান যেটা পয়সার বিনিময়ে বাজার থেকে কেনা যায় না। রক্তদানের মাধ্যমে একটা ঐশ্বরিক অনুভূতি চলে আসে। এই সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে অন্যকেও উদ্বুদ্ধ করা যায়। রক্তদানে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের তুলনায় আমরা অনেক ধাপ এগিয়ে রয়েছি। ১০০ জনের মধ্যে ১৫ জনের নেগেটিভ রক্ত থাকে। তাই নেগেটিভ রক্তের পর্যাপ্ত মজুত রাখার গুরুত্ব রয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে ১৪টি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। এরমধ্যে ১২টি সরকারি এবং ২টি বেসরকারি। এসমস্ত ব্লাড ব্যাংকগুলিতে সবসময় রক্ত মজুত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে ত্রিপুরা রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদ।

লোকসংখ্যার অনুপাতে ১% রক্ত মজুত থাকতে হয়। রক্তদানের ক্ষেত্রে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখা উচিত। রক্তদান করা নিজের স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল। এতে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে শরীরের রোগব্যাধি সম্পর্কে জানা যায়। রক্ত দেওয়ার আগে প্রতিটা ক্লাব ও সংস্থায় একটা আলোচনা সভা করা প্রয়োজন। এতে মানুষের মধ্যে আরও সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।'