আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলতি মাসের মাসের শেষের দিকে ভারত সফর করবেন। বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। বর্তমানে রাশিয়ায় রয়েছেন দোভাল। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা ‘ইন্টারফ্যাক্স’ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে পুতিনের ভারত সফরের বিষয়টি জানিয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে রুশ প্রেসিডেন্টের এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী। 

বুধবারই ভারতীয় পণ্যে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করার শাস্তি এই বাড়তি ২৫ শতাংশ কর আরোপ। আগামী ২৭ অগস্ট থেকে ভারতকে আমেরিকায় পণ্য রফতানি করতে হলে ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। পরে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখা দেশগুলির উপর 'আরও অনেক' বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। 

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাশিয়া ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। মস্কো জানিয়েছে যে, সার্বভৌম যেকোনও দেশের স্বাধীন ভাবে বাণিজ্যসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। রাশিয়ার অভিযোগ, ট্রাম্প বিভিন্ন দেশকে হুমকি দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করতে চাইছে।

আমেরিকার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর পরই বিদেশ মন্ত্রক জোর দিয়ে বলেছিল যে, "আমরা আবারও বলছি যে- এই পদক্ষেপগুলি অন্যায়, অযৌক্তিক এবং অন্যায্য। ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ করবে।

এক সরকারি বিবৃতিতে, বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিকে নিশানা করেছে। আমরা ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছি, যার মধ্যে রয়েছে যে- আমাদের আমদানি বাজারের কারণগুলির উপর ভিত্তি করে এবং ভারতের ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সামগ্রিক লক্ষ্য নিয়ে করা হয়েছে।"  বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "অতএব, এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থে যে পদক্ষেপ করছে তার জন্য ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বেছে নিয়েছে।"।

বিদেশ মন্ত্রক জোর দিয়ে বলেছে যে, "আমরা আবারও বলছি যে- এই পদক্ষেপগুলি অন্যায়, অযৌক্তিক এবং অন্যায্য। ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ করবে।"

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ভারত থেকে আমদানির উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের জন্য একটি আদেশে স্বাক্ষর করেন। তারপরই প্রধানমন্ত্রী মোদির 'বন্ধু' দেশের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। 

হোয়াইট হাউসের জারি করা আদেশ অনুসারে, ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক নীতি সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়গুলি, পাশাপাশি অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বাণিজ্য আইনগুলিকে এই বৃদ্ধির জন্য উল্লেখ করেছেন, দাবি করেছেন যে, ভারতের রাশিয়ান তেল আমদানি, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য "অস্বাভাবিক এবং অসাধারণ হুমকি।"

আদেশের পরে, ভারতীয় পণ্যের উপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশ হবে। প্রাথমিক শুল্ক ৭ আগস্ট কার্যকর হওয়ার পরে, অতিরিক্ত শুল্ক ২১ দিন পরে কার্যকর হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সমস্ত ভারতীয় পণ্যের উপর আরোপ করা হবে, ইতিমধ্যেই ট্রানজিটে থাকা পণ্য বা নির্দিষ্ট ছাড় পূরণকারী পণ্য ব্যতীত।

নির্বাহী আদেশটি পরিবর্তিত পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে পরিবর্তনশীল। যার মধ্যে অন্যান্য দেশ দ্বারা সম্ভাব্য প্রতিশোধ নেওয়া বা জাতীয় জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় রাশিয়া বা ভারতের গৃহীত পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আদেশে বলা হয়েছে, "তদনুসারে, এবং প্রযোজ্য আইন অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক অঞ্চলে আমদানি করা ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।" 

রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে আসন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের খবরের মধ্যে পুতিনের ভারত সফরের খবরও এসেছে। হোয়াইট হাউসের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন যে, আগামী সপ্তাহে দুই নেতার দেখা হওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন- প্রেমের প্রতীক বলেই কি যমুনার জল ছুঁতে পারে না তাজমহল? ‘পত্নী, প্রেম অউর আগ্রা’-র পরতে পরতে রহস্য, সত্যিটা জানলে চমকে যাবেন আপনিও