আজকাল ওয়েবডেস্ক: তামিলনাড়ুর সমুদ্র উপকূলে ভেসে উঠল এক বিরল সামুদ্রিক প্রাণী—'ডুমসডে ফিশ'। প্রায় ৩০ ফুট লম্বা এই অতিকায় মাছটিকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা উপকূলবর্তী অঞ্চলে। স্থানীয় জেলেরা প্রথম মাছটিকে দেখতে পান, তারপরই ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে। ঘটনাটিকে কেউ বলছেন নিছক প্রকৃতির কৌতূহলী বিস্ময়, কেউ আবার দেখছেন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস হিসেবে।

'ডুমসডে ফিশ' নামে পরিচিত এই মাছের প্রকৃত নাম ওরফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম Regalecus glesne। এটি পৃথিবীর দীর্ঘতম কশেরুকাযুক্ত মাছ বলে পরিচিত। সাধারণত এটি সমুদ্রের গভীরে, প্রায় এক হাজার মিটার নিচে বসবাস করে। রূপালি ফিতের মতো দেহ আর লাল পাখনা বিশিষ্ট এই মাছ খুব কমই জলের উপরিভাগে উঠে আসে।

জাপান ও পূর্ব এশিয়ার বহু সংস্কৃতিতে ওরফিশকে ভূমিকম্প বা সুনামির মতো দুর্যোগের পূর্বাভাস হিসেবে ধরা হয়। ২০১১ সালের জাপান সুনামির আগে উপকূলে একাধিক ওরফিশ উঠে এসেছিল, সেই স্মৃতি এখনও অনেকের মনে উজ্জ্বল। ফলে তামিলনাড়ুর এই সাম্প্রতিক ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে—আবার কি কোনও বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসন্ন?

তবে বিজ্ঞানীরা এখনই এমন কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে নারাজ। সমুদ্রজগতের বিশেষজ্ঞদের মতে, ওরফিশ গভীর সমুদ্রের পরিবর্তিত পরিবেশ, জলতাপমাত্রা বৃদ্ধি বা নিজেদের অসুস্থতার কারণেও উপরের দিকে উঠে আসতে পারে। ফলে একে বিপর্যয়ের পূর্বাভাস বলা হলেও, তা এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়।

এই ঘটনার সময়জুড়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো দেশের কোভিড পরিস্থিতি। নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৪,০০০ ছাড়িয়েছে। এই অবস্থায় এমন এক ‘রহস্যময় বার্তাবাহক’-এর আবির্ভাব জনমনে উদ্বেগকে বাড়িয়ে দিয়েছে বইকি।

তবে বিজ্ঞান ও সংস্কারের দ্বন্দ্বের মাঝে, এই ঘটনা আমাদের একটাই বার্তা দেয়—প্রকৃতির প্রতি আমাদের নজর ও সচেতনতা আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন। হয়তো এই মাছ কোনও অশনিসংকেত বহন করছে না, তবুও এই ঘটনায় লুকিয়ে আছে গভীর এক ইঙ্গিত—প্রকৃতি নিঃশব্দে কিছু বলতে চাইলে, তা আমরা শুনতে প্রস্তুত তো?