আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাহুল গান্ধী। দিন কয়েক আগেই, ভোট চুরি নিয়ে সরব হয়েছিলেন এবং তাঁর ঘণ্টাখানেকের বক্তব্যে একেবারে শোরগোল দেশের রাজনীতিতে। এবার তিনি দাবি করলেন, মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বসেছিলেন চা চক্রে।
কী রকম বিষয়টা? দিনকয়েক আগেই বিহারে খসড়া ভোতার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ৬৫ লক্ষ মানুষ বাদ পড়েছেন তালিকা থেকে। তাদের মধ্যে ২২ লক্ষের বেশি ভোটার মৃত, তথ্য তেমনটাই। ওই মৃত ভোটার তালিকার কয়েকজন, অর্থাৎ যাঁরা মৃত হিসেবে ঘোষিত, তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে চা-চক্রে বসেছিলেন কংগ্রেস নেতা। নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন রাহুল। তাতে লিখেছেন, জীবনের নানা মজার এবং অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার মধ্যে এটি অন্যতম। কারণ এর আগে মৃত ভোটারদের সঙ্গে চা খাওয়ার সুযোগ হয়নি তাঁর। তিনি নির্বাচন কমিশনকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই কারণে।
আরও পড়ুন: ছেলে 'ভোট চুরি' নিয়ে সরব হতেই নিশানায় মা, সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ বিজেপির অমিত মালব্যর
দেশের নির্বাচনে, ভোটার তালিকায় ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ আগেই তুলছেন রাহুল। তথ্য-সহ প্রমাণ দেখিয়েছেন। এদিন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও পোস্ট করেছেন, তাতে দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বসে চা খাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা। টুকটাক আলাপচারিতাও সারছেন। সেখানেই বলতে শোনা গিয়েছে বাকি কথা। ওই কয়েকজন, যাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতা সারছিলেন রাহুল, তাঁরা ভোতার তালিকায় মৃত বলে চিহ্নিত। তাঁরা বলছেন, কেবল তাঁরা নন, এরকম রয়েছেন আরও অনেকেই। যাঁরা রয়েছেন, হাঁটছেন, চলছেন, কথা বলছেন, অথচ নির্বাচন কমিশনের চোখে মৃত।
একইসঙ্গে উল্লেখ্য, লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বুধবার (১৩ আগস্ট) পুনের বিশেষ এমপি/এমএলএ আদালতে দাবি করেন, তিনি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পদক্ষেপের পর থেকে প্রাণনাশের হুমকির মুখে রয়েছেন। বিশেষত, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মানহানির মামলা যিনি দায়ের করেছেন সেই সত্যকি সাভারকরের পারিবারিক বংশপরিচয়কে কেন্দ্র করেই এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আইন সংক্রান্ত ওয়েবপোর্টাল বার অ্যান্ড বেঞ্চ-এর প্রতিবেদনে জানা যায়, রাহুল গান্ধী আদালতে বলেন, মামলার ন্যায্যতা ও নিজস্ব নিরাপত্তা— দুই'ই গুরুতরভাবে বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তিনি মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের কাছে “প্রতিরোধমূলক সুরক্ষা” (Preventive Protection) প্রদানের আবেদন করেছেন। তাঁর পক্ষে আইনজীবী মিলিন্দ দত্তাত্রেয় পাওয়ারের মাধ্যমে দাখিল করা আবেদনে বলা হয়, “প্রতিরোধমূলক সুরক্ষা প্রদান শুধু বুদ্ধিমানের কাজ নয়, বরং এটি রাজ্যের সাংবিধানিক দায়িত্ব।” আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, মামলার ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা ও সততা বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ একান্ত প্রয়োজন।
আবেদনে বলা হয়, ২৯ জুলাই দাখিল করা এক লিখিত জবাবে সত্যকি সাভারকর স্বীকার করেছেন যে, মাতৃকূলের সূত্রে তিনি নাথুরাম গডসে ও গোপাল গডসের প্রত্যক্ষ বংশধর—যাঁরা মহাত্মা গান্ধী হত্যার মূল অভিযুক্ত ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি বিনায়ক দামোদর সাভারকরের বংশধর হওয়ার দাবিও করেছেন। রাহুল গান্ধীর দাবি, “বাদীর এই বংশপরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত সহিংস ও অসাংবিধানিক প্রবণতার ঐতিহাসিক প্রমাণের কারণে আমার ক্ষতি, মিথ্যা ফাঁসানো বা অন্য ধরনের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার স্পষ্ট, যুক্তিসঙ্গত ও গুরুতর আশঙ্কা রয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকাণ্ড তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ ছিল না, বরং এটি ছিল নির্দিষ্ট মতাদর্শ দ্বারা পরিচালিত একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যা নিরস্ত্র মানুষের ওপর উদ্দেশ্যমূলক সহিংসতার ফলাফল।
