আজকাল ওয়েবডেস্ক: আইফোন প্রস্তুতকারী সংস্থা ফক্সকন হঠাৎ করেই তাদের ভারতীয় প্ল্যান্টে কর্মরত ৩০০ জনেরও বেশি চীনা ইঞ্জিনিয়ারকে ফিরিয়ে নিয়েছে। এই পদক্ষেপ প্রযুক্তি শিল্পে অশোরগোল ফেলেছে। উঠছে অনেক প্রশ্ন। তবে, ভারতের তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রক জানিয়েছে যে, এই সমস্যাটি অস্থায়ী, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। 

মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের সূত্র জানিয়েছে যে- ভারত দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রস্তুত। কারণ স্থানীয় ভারতীয় কর্মীরা এই শূন্যস্থান পূরণ করতে সক্ষম। ফক্সকন ইতিমধ্যেই আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ৫০০ থেকে ১,০০০ ভারতীয় কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে।

শুধু তাই নয়, ভারত নিজস্ব যন্ত্রপাতি এবং উৎপাদন সরঞ্জাম তৈরিও শুরু করছে, যার অর্থ ভবিষ্যতে আইফোন নির্মাণের জন্য অন্য দেশের উপর নির্ভর করতে হবে না।

এটি কি চীনের কৌশলের অংশ?
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে যে, ইঞ্জিনিয়ারদের এভাবে মোটেই স্বাভাবিক নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এই পদক্ষেপ "চায়না প্লাস ওয়ান" কৌশলকে ধীরে করার জন্য বেজিংয়ের পরিকল্পনার অংশ হতে পারে।

অনেক বড় প্রযুক্তি সংস্থা এখন তাদের কারখানা চীন থেকে সরিয়ে নিচ্ছে, সেগুলি ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্থানান্তর করছে। এই পরিবর্তন বন্ধ করার জন্য, চীন দক্ষ কর্মী এবং উন্নত মেশিনের ভারত-সহ অন্যান্য দেশে চলাচল বন্ধ করতে শুরু করেছে।

এর অর্থ কী?
চীনা ইঞ্জিনিয়ারদের প্রত্যাবর্তন উদ্বেগের কারণ হলেও ভারত প্রস্তুত। আরও নিয়োগ এবং স্থানীয় উন্নয়নের সঙ্গে, ভারত ধীরে ধীরে ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনে শক্তিশালী হয়ে উঠছে এবং চীনের উপর নির্ভরশীলতা কমছে।

চীনা ইঞ্জিনিয়াররা ফক্সকন ছাড়ার পর ভারতের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ-

ফক্সকনের ভারতে প্ল্যান্টের চীনা ইঞ্জিনিয়াররা কেবল কাজই করছিলেন না, তারা ভারতীয় দলগুলিকে প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন।

ভারতের জন্য লুকানো সুযোগ-
প্রাথমিকভাবে বিপর্যয় বলে মনে হলেও, ভারত সরকার এবং শিল্প বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে- এই পদক্ষেপ আ ভারতের জন্য সাপে বড়।  আসলে একটি ভারতের জন্য বিরাট সুযোগ তৈরি করেছে। দক্ষতা উন্নয়নের উপর ভারতের মনোযোগকে ত্বরান্বিত করতে পারে এবং দেশকে বৃহত্তর প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতার দিকে ঠেলে দিতে পারে।

বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীরা কেন চিন্তিত?
এখনও পর্যন্ত, ফক্সকন এবং অ্যাপল ইঞ্জিনিয়ারদের চলে যাওয়ার বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। এটি, বিশেষ করে প্রযুক্তি প্রতিভা এবং মেশিনগুলিকে চলে যেতে বাধা দেওয়ার চীনের কৌশল ভারতের ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন বৃদ্ধিতে ক্ষতি করতে পারে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

তবে বিশ্লেষকরা আশাবাদী। তারা বলছেন যে, ভারতের পোক্ত মেধাসম্পন্ন কর্মীরা এবং "মেক ইন ইন্ডিয়া" এবং "সেমিকন্ডাক্টর মিশন"-এর মতো সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে, দেশটি অদূর ভবিষ্যতে একটি বিশ্বব্যাপী উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে ওঠার পথে রয়েছে।