আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভাবা পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রের (বার্ক) একজন বিজ্ঞানী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার হয়েছেন আখতার কুতুবুদ্দিন হোসেইনি আহমেদ ওরফে আলেকজান্ডার পামার নামে এক ব্যক্তি। তাঁর কাছ থেকে সন্দেহজনক পারমাণবিক তথ্য এবং এক ডজনেরও বেশি মানচিত্র উদ্ধার করেছে মুম্বই পুলিশ। এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাজেয়াপ্ত করা নথিগুলি এখন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে যে এতে কোনও সংবেদনশীল বা গোপনীয় পারমাণবিক তথ্য আছে কি না।

একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আখতার গত কয়েক মাসে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক নম্বরে ফোন করেছিলেন। সেই কল রেকর্ডগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের সন্দেহ, আখতার বিদেশী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন যা সন্দেহভাজন পারমাণবিক তথ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। 

মুম্বইয়ে কয়েকদিন আগে ৬০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে ভুয়ো বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচয় এবং একাধিক ভুয়ো পরিচয়ে বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৭ অক্টোবর মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ইউনিট তাঁকে হেফাজতে নেয় এবং ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখে। দু’দিন আগেই দিল্লি পুলিশ আখতারের ভাই, ৫৯ বছর বয়সী আদিলকেও গ্রেপ্তার করেছে। যাকে আখতার আগে মৃত বলে জানিয়েছিলেন। একজন বিদেশী পারমাণবিক বিজ্ঞানীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গুপ্তচরবৃত্তির কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

আখতারকে গ্রেপ্তারের পর তদন্তে পুলিশ ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের জড়িত থাকার সন্দেহ করছে। তদন্তে জানা গিয়েছে যে, ঝাড়খণ্ডের মুনাজ্জিল খান আখতারের ভাইয়ের জন্য দু’টি জাল পাসপোর্ট তৈরি করেছিলেন জামশেদপুরের আজাদনগরে তাঁদের পৈতৃক বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করে। যে সম্পত্তিটি প্রায় ৩০ বছর আগে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: সরকার ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়েছিল হিংসা! সুপ্রিম কোর্টে ১১৭ পাতার হলফনামা দিয়ে জানাল দিল্লি পুলিশ

পুলিশ জানিয়েছে, ১৯৯৫ সালে বাবার মৃত্যুর পর বাড়ি বিক্রি করে আখতার পাসপোর্ট তৈরি করেছিলেন। জাল নথিপত্রগুলি হুসেইনি মহম্মদ আদিল এবং নাসিমুদ্দিন সৈয়দ আদিল হুসেইনি নামে তৈরি করা হয়েছিল। আখতার এবং আদিল, উভয় ভাই, এই জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আখতারকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। আদিলকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের আধিকারিকরা আলি রাজা হুসেনের নামে একাধিক জাল পাসপোর্ট, আধার এবং প্যান কার্ড এবং জাল বিএআরসি-র পরিচয়পত্র বাজেয়াপ্ত করার পর আখতারকে ভারসোভার ইয়ারি রোড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে যে তাঁর ছদ্মবেশ ধারণের ইতিহাস রয়েছে। ২০০৪ সালে, গোপন নথিপত্র থাকার মিথ্যে দাবি করার জন্য তাঁকে দুবাই থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। পরে তিনি জাল পাসপোর্টে তেহরান এবং দুবাই ভ্রমণ করেছিলেন।