আজকাল ওয়েবডেস্ক: পৃথিবীতে প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। আমেরিকার একটি সংস্থার সমীক্ষা বলছে শুধুমাত্র ২০২২ সালে প্রায় ১০ লক্ষ আমেরিকান হৃদরোগে মারা গিয়েছেন। বাকি বিশ্বের ক্ষেত্রেও বিষয়টি খুব একটি আলাদা নয়। অথচ সমস্যার কথা হল অধিকাংশ মানুষই জানেন কোন কোন কারনে হৃদরোগ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, ধূমপান এবং বংশগতির কারণে এই রোগ হয়। তবে বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলকেই এই রোগের প্রধান কারণ হিসাবে গণ্য হচ্ছে।

সাধারণভাবে দেহের কোলেস্টেরল মাপার জন্য চিকিৎসকরা লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করতে দেন। এই পরীক্ষার মাধ্যমে লো ডেন্সিটি লাইফোপ্রোটিন এবং হাই ডেনসিটি লাইপো প্রোটিন অর্থাৎ এল-ডি-এল এবং এইচ-ডি-এল এর পরিমাণ জানা যায়।

এর মধ্যে লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন বা এলডিএলকে খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এই কোলেস্টেরল রক্তনালীর মুখ বন্ধ করে দেয়। আর রক্তনালীর মধ্যে প্লাক জমলে হৃদযন্ত্র কিংবা মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে তার ফলে দেখা দিতে পারে হৃদরোগ এবং স্ট্রোক। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি ডেসিলিটার রক্তের ৬০ মিলিগ্রামের বেশি খারাপ কোলেস্টেরল থাকলে চিকিৎসকরা তাকে খারাপ অবস্থা বলে গণ্য করেন।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?

অন্যদিকে হাই ডেন্সিটি লাইপোপ্রোটিনকে ভাল কোলেস্টেরল বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু এই ধরনের কোলেস্টেরলের প্রভাব সব মানুষের ক্ষেত্রে সমান নয়। তাই এখন চিকিৎসকরা বলছে লিপিড প্রোফাইলের সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি রক্ত পরীক্ষা করতে, তাতেই নাকি ধরা পড়বে হৃদযন্ত্রের প্রকৃত অবস্থা। এই পরীক্ষাটির নাম অ্যাপোলাইপোপ্রোটিন বি-পেস্ট। সংক্ষেপে একে বলা হয় অ্যাপো বি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এই অ্যাপো বি অনুটি সব ধরনের অপকারী কোলেস্টেরলের গায়ে থাকে। যে যে কোলেস্টেরল অনু রক্তনালীর গায়ে জমাট বেঁধে রক্তকে আটকাতে পারে তাদের মধ্যে একে খুঁজে পাওয়া যায়। কাজেই সাধারন লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষায় যে কোলেস্টেরল অনু দৃষ্টি এড়িয়ে যেতে পারে এই পরীক্ষাটিতে সেগুলির পার পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এ কারণেই মার্কিন বিজ্ঞানীদের মতে দেহে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল মাপার এবং হৃদরোগের আশঙ্কা যাচাই করার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি এই পরীক্ষা।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
এই পরীক্ষার আরও একটি সুবিধা হল সমস্যা গভীর হওয়ার আগে থেকেই বিষয়টিকে চিহ্নিত করা যায়। বাস্তবে অনেকেই উচ্চ রক্তচাপ বা উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা বুঝতে পারেন না। ফলে যতদিনে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয় ততদিনে অনেকটাই গভীর হয়ে যায় অসুখ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৪০ এর পর গিয়ে হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে। কিন্তু একবার সমস্যা তৈরি হয়ে গেলে তখন সুস্থ জীবনে ফেরার পথ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কাজেই যদি ২০ বা ৩০ এর ঘরে এই আশঙ্কার কথা জানা যায় তবে আগে থেকেই রোগ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, ধূমপান মদ্যপান ত্যাগ- দৈনন্দিন জীবনে এই ধরনের অভ্যাসে বদল আনলে বহুক্ষেত্রেই বিপদ এড়ানো সম্ভব। সব মিলিয়ে যদি বংশে হৃদরোগের ইতিহাস থাকে তাহলে আগেভাগেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে এই পরীক্ষাগুলি নিতে পারেন।