আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘যৌনশিক্ষা’ শব্দটি শুনলেই মাথায় বাজ পড়ে একটা বড় সংখ্যক মানুষের। অথচ সুস্থ শরীর ও মনের বিকাশে এটি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলে বোঝানো যায় না। যৌনশিক্ষার অভাবেই এখনও বড় সংখ্যক মানুষ নানান যৌন ক্রিয়াকলাপ নিয়ে ভুল ধারণা পোষণ করেন। এমনই একটি বিষয় হল, হস্তমৈথুন বা স্বমেহন। ইউটিউব-ফেসবুক খুললেই দেখা যায় এইট ফেল স্বঘোষিত বাবাজি কিংবা মাতব্বরেরা বীরদর্পে ঘোষণা করেন, খবরদার! ভুলেও হস্তমৈথুন করবেন না! এমনকী যুবসমাজকে এও বার্তা দেওয়া হয় যেন বিষয়টি এক মহাপাপ। অথচ অল্পবিস্তর বিজ্ঞান চর্চা করলেই জানা যায়, এই ধারণা মূর্খামি ছাড়া আর কিছুই নয়। খারাপ তো নয়ই উল্টে নিয়মিত স্বমেহন এবং বীর্যপাতে ভাল থাকে শরীর। দূরে থাকে ক্যানসার। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন।
সাম্প্রতিক একের পর এক গবেষণায় উঠে আসা তথ্য একেবারে সরাসরি নাকচ করে দেয় হস্তমৈথুন সম্পর্কিত যাবতীয় কুসংস্কারকে। হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ-এর একটি উল্লেখযোগ্য সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, নিয়মিত বীর্যপাত প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
প্রায় দুই দশকব্যাপী এই গবেষণা অনুযায়ী, যে সমস্ত পুরুষ মাসে অন্তত ২১ বার বা তার বেশি বীর্যপাত করেন, তাঁদের প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কম। সমীক্ষায় স্পষ্ট দেখা গিয়েছে যাঁরা মাসে ৪ থেকে ৭ বার বীর্যপাত করেন, তাঁদের তুলনায় ২১ বা ততোধিক বার বীর্যপাত করা পুরুষদের মধ্যে এই ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কম। এই গবেষণাটি প্রায় দুই দশক ধরে হাজার হাজার পুরুষের উপর করা হয়েছে। কাজেই এর ফল নিয়ে সন্দেহের অবকাশ প্রায় নেই বললেই চলে।
এর নেপথ্যে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, নিয়মিত বীর্যপাতের ফলে প্রোস্টেট গ্রন্থি থেকে পুরনো কোষ এবং সম্ভাব্য ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। পাশাপাশি বীর্যপাতের ফলে প্রোস্টেটের প্রদাহ কমে, যা প্রোস্টেট ক্যানসারের একটি অন্যতম প্রধান কারণ।
তবে বিশেষজ্ঞদের সাফ কথা এই অভ্যাসের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ধূমপান বর্জনের মতো বিষয়গুলোও ক্যানসার রোধে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
