আজকাল ওয়েবডেস্ক: “খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে।” ভক্তির এহেন স্বরূপ যেন বাস্তবেই দেখা গেল মধ্যপ্রদেশে। চলতি সপ্তাহের শুক্রবার সকালে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের এক সরকারি হাসপাতালে জন্ম নিল আক্ষরিক অর্থেই বিরাট এক শিশুকন্যা। আর শিশুরা যে ঈশ্বরের স্বরূপ তা কি কেউ অস্বীকার করতে পারে? তবে গোটা বিষয়টিতে দৈব প্রভাব থাক বা না থাক, ওজনের নিরিখে কিন্তু সত্যিই রেকর্ড গড়ল এই নবজাতক। সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া ওই সদ্যোজাতের ওজন ৫.৪৩ কিলোগ্রাম! যা মধ্যপ্রদেশের ইতিহাসে কোনও সরকারি হাসপাতালে জন্মানো শিশুদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন: শুক্রাণু দান করে কত টাকা আয় হয়? ভারতে বীর্য দাতা হতে গেলে কোন কোন নিয়ম জানতে হবে?
হাসপাতাল সূত্রে খবর শিশুটির মায়ের নাম রিতা, বয়স ২৪। বাবার নাম নন্দকিশোর। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রিতার নানা রকম শারিরীক অসুবিধা দেখা দেয়। সেকারণে সন্তান প্রসবের জন্য তাঁকে ইন্দোরের পি. সি. শেঠি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভর্তির সময় তাঁর একাধিক শারীরিক জটিলতা ছিল। দীর্ঘদিনের উচ্চ রক্তচাপ, ক্র্যাম্প এবং সারা শরীরে তীব্র ফোলাভাবের মতো সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। রিতার নিজের ওজনও ছিল ৯০ কেজি। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক প্রসব কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ফলে চিকিৎসকেরা জরুরি ভিত্তিতে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন।
যে প্রসূতি বিশেষজ্ঞের নেতৃত্বে এই অস্ত্রোপচার হয়, সেই ডঃ কোমল বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন, “এটি অত্যন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ একটি অস্ত্রোপচার। আমরা শিশুর হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপের উপর কড়া নজর রাখছি। তবে মা এবং শিশু দু’জনেই এখনও পর্যন্ত স্থিতিশীল রয়েছে এবং আশা করছি খুব শীঘ্রই তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিতে পারব।”
আরও পড়ুন: লাবুবু ঘিরে বাড়ছে আতঙ্ক! পুতুল, নাকি শয়তানের দূত? ভয়াবহ অভিজ্ঞতায় সন্ত্রস্ত বলি নায়িকাও
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এর আগে রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ওজনের শিশুর জন্মের রেকর্ড ছিল মান্ডালা জেলার। ২০২১ সালে সেখানে ৫.১ কেজি ওজনের এক শিশু জন্মেছিল। ইন্দোরের এই শিশুকন্যা সেই নজির ভেঙে দিল।
গোটা ঘটনায় খুশি স্বাস্থ্যকর্তারাও। এই ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন মধ্য প্রদেশের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ মাধব হাসানি। তিনি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সফল অস্ত্রোপচারের সাফল্যের জন্য সাধুবাদ জানান। হাসানি বলেন, “জননী সুরক্ষা যোজনার মতো সরকারি প্রকল্পের অধীনে এখন যে উন্নত মানের প্রসূতি পরিষেবা পাওয়া যায়, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।” মা ও মেয়েকে আরও কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তার পরেই তাঁদের বাড়ি পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, জন্মের সময় সাধারণ ভাবে শিশুর ওজন আড়াই থেকে চার কেজির মধ্যেই থাকে। কখনও কখনও শিশুকন্যার চেয়ে ছেলেদের ওজন বেশি হয়। জন্মের সময় শিশুর ওজন বেশি হবে না কম তার কিছুটা নির্ভর করে বংশগতির উপরের। এছাড়া মায়ের স্বাস্থ্য, কত মাসের মাথায় শিশুর জন্ম হচ্ছে এই সব বিষয়গুলিও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে শিশুর ওজন কতটা হবে। তবে মধ্যপ্রদেশের এই নতুন অতিথির ঘটনা বিরল হলেও অস্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।