আজকাল ওয়েবডেস্ক: এখন নেটমাধ্যমে একটি মজার জোক মারাত্মক ঘুরপাক খাচ্ছে। ত্রিশোর্ধ্ব দুই তরুণ তরুণী ডেটে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে প্রেম নয়, কথা হচ্ছে কোমর এবং হাঁটুর ব্যথা নিয়ে। মজার ছলে দেখানো হলেও বিষয়টা কিন্তু খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ এখন অল্পবয়সেই বহু মানুষ হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন। হাড় আমাদের শরীরের কাঠামো ধরে রাখে এবং ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে রক্ষা করে। হাড়ের ঘনত্ব কম হলে অস্টিওপরোসিস নামে একটি রোগ হতে পারে, যাতে হাড় খুব দুর্বল হয়ে যায়। তাই সুস্থ থাকতে এবং হাড় ভাঙা থেকে বাঁচতে হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখা দরকার। আর এই কাজে সহায়ক হতে পারে স্বাস্থ্যকর খাবার।

১.  দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার (যেমন দই, পনির): দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। ক্যালসিয়াম হল হাড়ের প্রধান খনিজ উপাদান, যা হাড়কে মজবুত করে এবং ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের প্রায় ৯৯% ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতে জমা থাকে। দুগ্ধজাত খাবারে ফসফরাসও থাকে, যা ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিলিত হয়ে হাড়ের গঠনকে শক্তিশালী করে।

২.  সবুজ শাকসবজি (যেমন পালং শাক, বাঁধাকপি): সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়, যদিও দুগ্ধজাত খাবারের তুলনায় এর শোষণ ক্ষমতা কিছুটা কম। তবে, এটি ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদভিত্তিক উৎস। পাশাপাশি এতে ভিটামিন কে প্রচুর পরিমাণে থাকে। ভিটামিন কে হাড়ের প্রোটিন তৈরি করতে সাহায্য করে এবং অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

৩.  চর্বিযুক্ত মাছ (যেমন স্যামন, ম্যাকারেল): স্যামন, ম্যাকারেল, সার্ডিন এবং হেরিং-এর মতো চর্বিযুক্ত মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। ভিটামিন ডি আমাদের শরীরকে খাবার থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে, যা শক্তিশালী হাড়ের জন্য অপরিহার্য। পাশাপাশি এই মাছগুলোতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

৪.  ডিম: ডিমের কুসুমে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যদিও চর্বিযুক্ত মাছের তুলনায় ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ কিছুটা কম থাকে, তবুও ডিম আমাদের দৈনিক ভিটামিন ডি-এর চাহিদা পূরণে সাহায্য করতে পারে।

৫.  বাদাম এবং বীজ (যেমন কাঠবাদাম, তিল): কাঠবাদাম, তিল, চিয়া বীজ এবং কুমড়োর বীজের মতো বাদাম ও বীজে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস থাকে। ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি এবং হাড়ের গঠন বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফসফরাস ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিলিত হয়ে হাড়কে শক্তিশালী করে।

এই খাবারগুলি নিয়মিত গ্রহণ করার পাশাপাশি, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলোতে থাকা (যা আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করতে সাহায্য করে) এবং নিয়মিত ব্যায়াম করাও জরুরি।