আজকাল ওয়েবডেস্ক: মনে পড়ে ছোটবেলায় ঝাল খেতে না চাইলে মা বলতেন, "ঝাল খেলে তাড়াতাড়ি বড় হওয়া যায়"? কিন্তু বড় হয়েও কি ঝাল খেতে ভাল লাগে না? আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান কিন্তু ঝালের পক্ষেই রায় দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিমিত পরিমাণে ঝাল খেলে শরীর নানাভাবে উপকৃত হতে পারে। এর নেপথ্যে রয়েছে লঙ্কাতে থাকা 'ক্যাপসাইসিন' নামের একটি প্রাকৃতিক যৌগ। ঝালের বিশেষ গুণের কথা জানলে হয়তো পরের বার আর কাঁচালঙ্কা পাতে নিতে দ্বিধা করবেন না।
১. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ঝাল খাবার খাওয়ার পরেই কি শরীরে একটা গরম ভাব অনুভব করেন? এর কারণ, ঝাল খেলে ‘থার্মোজেনেসিস’ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ক্যাপসাইসিন শরীরে এই প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে, যা দেহের বিপাক হার বা মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়। সহজ কথায়, শরীর আরও বেশি ক্যালোরি পোড়াতে শুরু করে। পুষ্টিবিদদের মতে, নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে ঝাল খেলে তা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
২. হৃদযন্ত্রের বন্ধু
ক্যাপসাইসিন রক্তনালীকে প্রসারিত করে রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা ভাল রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, রক্তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতেও সহায়তা করে এই যৌগ। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত ঝাল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমতে পারে।
৩. ব্যথা উপশমে আশ্চর্য দাওয়াই
ঝাল লাগলে জিভ জ্বালা করে বটে, কিন্তু জানেন কি ক্যাপসাইসিন ঝাল হলেও ব্যথা কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। আসলে ঝালের চোটে স্নায়ুতন্ত্রের ব্যথার সঙ্কেতকে সাময়িকভাবে অবশ হয়ে যায়। এই কারণেই আর্থ্রাইটিস, স্নায়ুর ব্যথা এমনকি মাইগ্রেনের চিকিৎসাতেও ক্যাপসাইসিন ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ব্যথা কমানোর ক্রিমেও এই উপাদান ব্যবহার করা হয়। শুধু কি তাই? দুশ্চিন্তা এবং উদ্বেগও নিয়ন্ত্রণে থাকে নিয়মিত লঙ্কা খেলে। কারণ ক্যাপসাইসিন দেহে হ্যাপি হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে।
তবে সাবধান! বিশেষজ্ঞদের মতে, ঝালের উপকারিতা পেতে পরিমিতিবোধ জরুরি। যাঁদের গ্যাস, অম্বল, আলসার বা ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম’-এর মতো হজমের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ঝাল এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। অতিরিক্ত ঝাল খেলে পেটে জ্বালা, ব্যথা বা ডায়েরিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই নিজের শরীরের অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নিন।
