একসময় মনে করা হত,স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া কেবল বয়স্কদের রোগ। কিন্তু এখন তরুণদের মধ্যেও তা নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, আজকাল ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সি তরুণ-তরুণীর মধ্যেও স্ট্রোকের হার দ্রুত বাড়ছে। তাই আগেভাগেই সচেতন হওয়া জরুরি।
2
7
তরুণদের মধ্যেই কেন বাড়ছে স্ট্রোকের ঝুঁকি? বিশেষজ্ঞদের মতে, আজকের ব্যস্ত জীবনযাত্রায় তরুণদের মধ্যে ঘুমের ঘাটতি, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান ও মদ্যপানের প্রবণতা বেড়েছে। দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা, ব্যায়ামের অভাব এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপও মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে প্রভাব ফেলে। ফলস্বরূপ, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি ও ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা অল্প বয়সেই দেখা দিচ্ছে। যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
3
7
চিকিৎসকরা আরও জানাচ্ছেন, মহিলাদের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি বাড়ছে। গর্ভনিরোধক ওষুধের ব্যবহার, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও ক্লটিং ডিসঅর্ডারের মতো কারণেও তরুণীদের মধ্যে স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ছে।
4
7
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানোর তিন ধাপের সহজ ফর্মুলাঃ ১. হৃদযন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনঃ প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন। অন্তত সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট হাঁটুন। নুন, চিনি ও তেল কমিয়ে ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান। ধূমপান পুরোপুরি বাদ দিন এবং অ্যালকোহল যতটা সম্ভব সীমিত রাখুন।
5
7
২. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন: উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরল বাড়ছে কিনা তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। পরিবারের কারও স্ট্রোক বা হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে আরও সতর্ক থাকুন।
6
7
৩. স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ চিনুন: মুখ বেঁকে যাওয়া, কথা জড়ানো বা হঠাৎ একপাশের হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া-এগুলো স্ট্রোকের প্রথম লক্ষণ। চিকিৎসকরা বলেন, 'এফএএসটি' সূত্রটি মনে রাখুন। অর্থাৎ ফেস (মুখ), আর্ম (হাত), স্পিচ (কথা), টাইম (সময়)। এসব লক্ষণ দেখা দিলে এক মুহূর্ত দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
7
7
ব্রেন স্ট্রোক মানে মৃত্যু, একেবারে ভ্রান্ত ধারণা। যার জন্য একেবারে গোড়ায় রোগ নির্ণয় করা জরুরি। স্ট্রোক হওয়ার প্রথম ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি সিটি স্ক্যান করে রক্ত শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। পরীক্ষায় যদি মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধা ধরা পড়ে তাহলে বর্তমান উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগীকে সুস্থ করে ফেলা সম্ভব। তবে স্ট্রোক হলে সময়ই সবচেয়ে বড় অস্ত্র। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে মস্তিষ্কের ক্ষতি কমানো সম্ভব, আর সময় যতটা বাড়বে প্রাণহানির আশঙ্কাও ততটা বাড়বে।