এই বছরের প্রথমার্ধে নজিরবিহীন ঊর্ধ্বগতি দেখানোর পর এপ্রিল ২০২৫ থেকে সোনার দাম প্রায় একই স্তরে আটকে আছে। প্রায় ১ লাখ টাকার আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে।
2
10
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল তথ্য অনুযায়ী এই বছর এখন পর্যন্ত সোনায় বিনিয়োগকারীরা ৩০ শতাংশের বেশি রিটার্ন পেয়েছেন। তবে, এর প্রায় সবটাই এসেছে এপ্রিলের মধ্যেই। তারপর থেকে সোনার দামে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
3
10
বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করা ম্যাক্রো ফ্যাক্টরগুলো স্তিমিত হয়ে পড়েছে বলেই সোনার দাম ১ লাখ টাকার কাছে আটকে আছে। এখান থেকে দাম বাড়তে হলে নতুন করে অনিশ্চয়তার আবির্ভাব দরকার।
4
10
বছরের একদম শুরু থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কনীতি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে শুরু করেন, যা গোটা বিশ্বের বাণিজ্য সমীকরণ নষ্ট করে দেয় এবং বাজারে বিরাট অনিশ্চয়তা তৈরি করে। শেয়ার বাজার এবং ঝুঁকিপূর্ণ অন্যান্য সম্পদ অনিশ্চয়তাকে পছন্দ করে না। তাই বিনিয়োগকারীরা ছুটতে শুরু করেন এমন সম্পদের দিকে, যা স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য রিটার্ন দেয়—ফলস্বরূপ, সোনার চাহিদা বেড়ে যায়।
5
10
এরপর পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চারদিন ব্যাপী সীমান্ত সংঘর্ষ পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজিত করে তোলে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বহু বছর ধরে চলছেই। তার সঙ্গে এক সপ্তাহব্যাপী ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ অনিশ্চয়তার মাত্রা আরও বাড়ায়।
6
10
এর বাইরেও বেশ কিছু ম্যাক্রো অর্থনৈতিক কারণ সোনাকে চাঙ্গা করে তোলে। বৈশ্বিক উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা, দুর্বল ডলার, এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির ধারাবাহিক সোনা কেনা।
7
10
রাজনৈতিক ঝুঁকি কমে যাওয়ায় সোনার ঝুঁকি প্রিমিয়াম কিছুটা কমেছে, যা দামের ওপর নিম্নমুখী চাপ তৈরি করেছে। মার্কিন-চিন বাণিজ্য যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে। ফলে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার চাহিদা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
8
10
মার্কিন ডলার জুনে তিন বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামার পর আবারও শক্তিশালী হয়েছে। কারণ মার্কিন অর্থনীতির প্রত্যাশার চেয়ে ভাল পরিসংখ্যান প্রকাশ পেয়েছে। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছে যে মার্কিন অর্থনীতি এখনও টিকে আছে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল এখনও কড়াভাবে নীতি বজায় রাখছেন এবং দ্রুত সুদ কমানোর কোনো ইঙ্গিত দেননি।
9
10
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির ধারাবাহিক সোনা কেনা এবং গোল্ড ইটিএফে শক্তিশালী বিনিয়োগ প্রবাহ সোনার ভিত্তিকে মজবুত রেখেছে। মার্কিন অর্থনীতির শ্লথ হওয়ার ইঙ্গিত এবং ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে বাড়তে থাকা উদ্বেগ সুদের হার কমানোর জল্পনাকে আরও জটিল করেছে। শুল্কজনিত মুদ্রাস্ফীতি এবং দুর্বল শ্রমবাজার ‘স্ট্যাগফ্লেশন’-এর ভয় বাড়াচ্ছে, যা সোনার জন্য ইতিবাচক।
10
10
গত চার মাস ধরে সোনা পাশ্চাত্য গতিতেই চলছে। বাজার অংশগ্রহণকারীরা অপেক্ষা করছেন বড় কোনো ট্রিগারের, যা সোনার দিক নির্ধারণ করবে।