পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হানায় ২৬ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ঠেকেছে। জঙ্গি হানার প্রত্যাঘাতে ভারত পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে।
2
15
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পরপ পর থেকে দুই দেশ কমপক্ষে তিনবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। সীমান্ত সংঘর্ষ যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দুই প্রতিবেশী দেশের সংঘাতের ইতিহাস।
3
15
১৯৪৭-৪৮, দেশভাগের পর সংঘাত: জম্মু এবং কাশ্মীরের দখল নিয়ে দুই দেশের সংঘাত যুদ্ধের রূপ নেয়। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির হয়।
4
15
১৯৬৫, দ্বিতীয় ভারত-পাক যুদ্ধ: ফের কাশ্মীরকে ঘিরে বিরোধ এবং দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ। ১৯৬৬ সালে তাসখন্দ চুক্তি স্বাক্ষরের পর শান্তি স্থাপিত হয়।
5
15
১৯৭১, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: পূর্ব পাকিস্তানে ভারতের হস্তক্ষেপ এবং বাংলাদেশের জন্ম। যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নামেও পরিচিত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একচ্ছত্র সামরিক জয় লাভ করে ভারত।
6
15
১৯৮৬-৮৭, অপারেশ ব্রাসট্যাকস: ১৯৮৬ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৮৭ সালের মার্চ মাসের মধ্যে পরিচালিত বৃহৎ ভারতীয় সামরিক মহড়ার নাম ছিল অপারেশন ব্রাসট্যাকস। রাজস্থানে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে বিশাল সৈন্য ও অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছিল। যা পাকিস্তান যুদ্ধের হুমকি হিসেবে বিবেচনা করেছিল। পরে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
7
15
১৯৮৯, কাশ্মীর অভ্যুত্থান: পাকিস্তান মদতপুষ্ট কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারত সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। বিদ্রোহ দমন করতে ভারত বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করে।
8
15
১৯৯৯, কার্গিল যুদ্ধ: জঙ্গিদের ছদ্মবেশে পাকিস্তানি সেনারা জম্মু এবং কাশ্মীরের কার্গিল অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে। ভারত পূর্ণ সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে পাল্টা জবাব দেয়। এর ফলে যুদ্ধ শুরু হয়। ভারত সফলভাবে অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিহত করে এবং কার্গিলে নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর স্থিতাবস্থা ফিরে আসার মাধ্যমে সংঘর্ষের অবসান ঘটে।
9
15
২০০১-০২, সংসদ হামলা: ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত সংসদ ভবনে জঙ্গি হামলা পাঁচজন জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি। এই হামলার ফলে দিল্লি পুলিশের ছয় জন, সংসদের দুই নিরাপত্তা কর্মী এবং একজন মালি নিহত হয়েছিল। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে মোতায়েন করা সেনার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়।
10
15
২০০৮, মুম্বই হামলা: ২০০৮ সালের মুম্বই হামলা, যা ২৬/১১ হামলা নামেও পরিচিত। পাকিস্তান-ভিত্তিক ইসলামপন্থী জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার ১০ জন সদস্য মুম্বই জুড়ে চার দিন ধরে ১২টি হামলা চালায়। এর পরেই পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীকে দায়ী করে ভারত। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সেনার সংখ্যা বৃদ্ধি করে দুই দেশই। তৈরি হয় যুদ্ধ পরিস্থিতি। পরে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
11
15
২০১১, নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘর্ষ: কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পাঁচজন ভারতীয় সেনা এবং তিনজন পাকিস্তানি সেনা প্রাণ হারায়। এই সংঘর্ষের জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে। ক্রমে দুই দেশ আলোচনার মাধ্যমে ক্ষান্ত হয়।
12
15
২০১৩, মেন্ধার সেক্টর ঘটনা: জম্মু এবং কাশ্মীরে এক ভারতীয় সেনার মুণ্ডচ্ছেদের পর সংঘর্ষের সূত্রপাত। দুই দেশের ২২ জন সেনা নিহত হয়।
13
15
২০১৬, সার্জিকাল স্ট্রাইক: উরিতে হামলার পর নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালায় ভারত। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পাল্টা হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানও।
14
15
২০১৯, বালাকোট হামলা: পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হানায় প্রাণ যায় ৪০ জন জওয়ানের। এই হামলার প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানের বালাকোটে আকাশ পথে হামলা চালায় ভারত।
15
15
২০২০-২১, নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘর্ষ: নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর দুই দেশের সেনাবাহিনীর গুলি বিনিময়। সাধারণ নাগরিক-সহ কমপক্ষে ২২ জন নিহত হন। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ফলে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং ঘরছাড়া হতে হয় অনেককে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।