নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ছবি ‘নায়ক’। বাংলার তো বটেই ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত সত্যজিতের এই কাজ। ছবির মুখ্য চরিত্রে ছিলেন উত্তমকুমার এবং শর্মিলা ঠাকুর। ‘নায়ক’-কে অনেকেই সত্যজিৎ রায়ের সেরা ছবির তালিকায় রাখেন। এছাড়াও এই ছবিতে ছিলেন বীরেশ্বর সেন, সৌমেন বোস, নির্মল ঘোষ, প্রেমাংশু বোস, যোগেশ চ্যাটার্জি এবং সুমিতা সান্যাল-এর মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। ছয়ের দশকে মুক্তি পাওয়ার পর এই ছবি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল জনতামহলে। সমালোচকরাও অকুন্ঠ প্রশংসায় কানায় কানায় ভরিয়ে দিয়েছিল এই ছবির সমালোচনার পাত্র। এবার প্রায় ছয় দশক পর এবার ফের একবার বড়পর্দায় পা রাখতে চলেছেন নায়ক! ছবির পুনরুদ্ধার করা ঝকঝকে সংস্করণটি রাজ্যের প্রেক্ষাগৃহে ইংরেজি সাবটাইটেল সহ প্রদর্শিত হবে।
ছবির গল্প আবর্তিত হয় একজন প্রখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা অরিন্দম মুখোপাধ্যায় (উত্তমকুমার) এবং সাংবাদিক অদিতি সেনগুপ্তকে (শর্মিলা ঠাকুর) কেন্দ্র করে। জাতীয় পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য কলকাতা থেকে দিল্লির ট্রেনে ওঠেন অরিন্দম। সেই ট্রেন যাত্রায় তাঁর সঙ্গে দেখা । তরুণ সাংবাদিকের কাছে তাঁর জীবনের নানান ঘটনার কথা বলার সময় একে একে তাঁর ভুল, নিরাপত্তাহীনতা এবং পরবর্তী সময় হওয়া নিজের অনুশোচনা প্রকাশ করে ফেলে অরিন্দম। ট্রেন যত এগোয়, পেঁয়াজের খোসার মতো একে একে খুলে পড়তে থাকে নায়কের জৌলুসভরা 'ইমেজ'। ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে তাঁর দুঃখ, স্বপ্ন, কষ্ট, হাহাকার-এককথায় মানবিক দিকগুলো। ছবি জুড়ে অরিন্দমের জীবনের টুকরো ঘটনা ফ্ল্যাশব্যাক এবং স্বপ্নের মাধ্যমে প্রকাশ পায় অদিতির পাশাপাশি দর্শকের কাছেও। দিল্লিগামী ট্রেন প্রান্তিক প্ল্যাটফর্ম ছুঁয়ে ফেলার আগে অদিতি বুঝতে পারে বাংলার জনপ্রিয়তম এবং সবথেকে বড় চলচ্চিত্র নায়কের মুখোশের পিছনে অরিন্দম একজন সাধারণ মানুষ, সহজ মানুষ। খানিক দুঃখী-ও।
স্বভাবতই এ খবরে নড়েচড়ে বসেছে ছবিপ্রেমীর দল। সত্যজিৎ-উত্তমের অনুরাগীদের জন্যও যে এই খবর যে এবারের বসন্তের সেরা উপহার, তাতে কোনও সন্দেহ আছে কি?
