সংবাদ সংস্থা মুম্বই: এটা নিছক একটা সিনেমার ব্যবসার নয়া ফন্দি নয়, এটা হতে পারে চলচ্চিত্র জগতের ডিজিটাল বিপ্লবের সূচনা। এবং এই বিপ্লবের মাঝখানে যিনি দাঁড়িয়ে, তিনি আর কেউ নন, আমির খান।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নেটফ্লিক্স নিজেদের প্রাথমিক প্রস্তাব দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে 'সিতারে জমিন পর' ছবির ডিজিটাল স্বত্ব কিনতে এবার তুলে ধরেছে এক বিশাল অঙ্ক — ১২৫ কোটি টাকা! যেখানে সাধারণত বলিউডের শীর্ষস্থানীয় ছবি পায় ৫০–৬০ কোটির অফার, সেখানে এই অঙ্ক নজিরবিহীন।
কিন্তু কেন এত উত্তেজনা? এর নেপথ্যে রয়েছে আমির খানের ‘ট্র্যাডিশনাল স্ট্রিমিং’-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বলে আসছেন— ভারতীয় দর্শকদের জন্য ইউটিউব পে-পার-ভিউ মডেলই সবচেয়ে সঠিক পথ। তাঁর মতে, এই মডেল অনেক বেশি দর্শকমুখী — যেখানে একবারের নামমাত্র টাকায় একজন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীও দেখতে পারবেন নতুন ছবি, কোনও মাসিক সাবস্ক্রিপশনের ঝামেলা ছাড়াই।
“ছবিকে পৌঁছে দিতে হবে ভারতের প্রত্যন্ত শহর, মফস্বলের মানুষের কাছেও”— আমির এমনটাই বলেননি শুধু, সেটা করে দেখানোর দিকেও এগোচ্ছেন। আর তাতেই চাপে পড়েছে নেটফ্লিক্সের–এর মতো স্ট্রিমিং জায়ান্টরা।
“যদি আমির ইউটিউব পে-পার-ভিউ মডেল সফল করে ফেলেন, তাহলে এটা গোটা ইকোসিস্টেম বদলে দেবে”, বলেন এক শীর্ষস্থানীয় ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডার। “নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোকে তখন লড়তে হবে এমন এক ফর্ম্যাটের সঙ্গে, যা সস্তা, উন্মুক্ত, এবং অনেক বেশি লোকজনের কাছে পৌঁছতে সক্ষম।”
নেটফ্লিক্সের পক্ষ থেকে তাই এবার আর শুধু ছবি কেনার কথা নয়, এটা তাদের ডিজিটাল দুনিয়ায় একচেটিয়া আধিপত্য রক্ষার লড়াই। ‘সিতারে জমিন পর’ -এর সঙ্গে আমির খানের গ্রহণযোগ্যতা ও সিনেমার বিশ্বাসযোগ্যতা মিলিয়ে এটা হয়ে উঠেছে ভারতের ওটিটি কৌশলের এক টার্নিং পয়েন্ট।
তবে এখনো নিশ্চিত নয়, আমির নেটফ্লিক্সের এই মেগা অফার গ্রহণ করবেন না কি ইউটিউব মডেলেই হাঁটবেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত যেদিকেই যাক, তা যে ভারতীয় সিনেমার ভবিষ্যতের ডিজিটাল মানচিত্রই বদলে দিতে পারে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
এই মুহূর্তে তাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন শুধু এটা নয় যে ‘সিতারে জমিন পর’ কেমন ছবি হবে, বরং এটা— ছবি দেখার নিয়মটাই এবার বদলে যাবে কি?
