আজকাল ওয়েবডেস্ক: আধার মূলত নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে নয়, কেবল পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। এই কারণে, শুরুতে এটি পাওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ ছিল। কিন্তু এখন, কেবলমাত্র যাচাইকৃত প্রাপ্তবয়স্করা যাতে আধার নম্বর পেতে পারেন তা নিশ্চিত করার জন্য নতুন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। 
অর্থাৎ টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুসারে আধার নথিভুক্তি আরও কঠিন করার পরিকল্পনা করছে সরকার।

সরকারি ডাটাবেস ব্যবহার করে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা-
ভারতের অনন্য পরিচয় কর্তৃপক্ষ (UIDAI), আধার তালিকাভুক্তি এবং আপডেটের সময় একজন ব্যক্তির বিবরণ যাচাই করার জন্য পাসপোর্ট, রেশন কার্ড, জন্ম শংসাপত্র এবং স্কুল সার্টিফিকেটের মতো বিষয়গুলি অনলাইন রেকর্ড ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে। এটি আধার ব্যবস্থাকে আরও নির্ভরযোগ্য এবং সুরক্ষিত করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আধার আইন অনুসারে, আধার নম্বর নাগরিকত্ব বা কেউ কোথায় থাকেন তার প্রমাণ নয়। তবে, নতুন যাচাইকরণ মাপকাঠিগুলি নিশ্চিত করার জন্য নয়া প্রক্রিয়া কার্যকর করার বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে কেবল ভারতীয় নাগরিকদেরই আধার নম্বর দেওয়া হয় তা নিশ্চিৎ করতেই এতকিছুর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।

নতুন তালিকাভুক্তির জন্য যাচাইকরণের দ্বিতীয় স্তর-
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, UIDAI একটি নতুন মাপকাঠিগুলি তৈরি করেছে, যা তালিকাভুক্তি এবং আপডেটের সময় অতিরিক্ত স্তরের সুরক্ষা যোগ করে। এই প্রক্রিয়াটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, প্যান কার্ড, ১০০ দিনের কাজের রেকর্ড এবং এমনকি বিদ্যুৎ বিলের মতো অনলাইন ডাটাবেসের সঙ্গে তথ্য যাচাই বা ক্রস-চেক করবে। এই পদক্ষেপগুলি কেন্দ্রীভূত কেওয়াইসি-র (know your customer/KYC) প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে মেলে এবং একটি সুসংগত এবং যাচাইকৃত পরিচয় ব্যবস্থা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।

ইতিমধ্যেই ১৪০ কোটিরও বেশি আধার নম্বর জারি করা হয়েছে-
গত ১৫ বছরে, ১৪০ কোটিরও বেশি আধার নম্বর তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও রয়েছেন, যারা প্রয়াত হয়েছেন। দেশের প্রায় সকল প্রাপ্তবয়স্কের কাছে এখন আধার রয়েছে, এমনকি নবজাতকরাও জন্মের পরপরই আধার নম্বর পাচ্ছে। তাই, সরকার এখন নতুন প্রাপ্তবয়স্ক নথিভুক্তকরণের জন্যনিয়ম  বিশেষভাবে কঠোর করছে।

অবৈধ অভিবাসীদের জাল নথি ব্যবহার করে আধার পাওয়া বন্ধ করার জন্য, সরকার রাজ্য কর্তৃপক্ষের জন্য অনুমোদনের আগে প্রতিটি আবেদনকারীর নথি সাবধানে পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক করেছে। এখন রাষ্ট্র পরিচালিত পোর্টালের মাধ্যমে যথাযথ যাচাইয়ের পরেই আধার জারি করা হয়।

আরও পড়ুন- ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাট নাকি হোয়াটঅ্যাপ, ভারতীয়রা কোন অ্যাপগুলি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন? ...

অতীতে উদ্বেগ ছিল যে অবৈধ অভিবাসীরা অন্যান্য সরকারি পরিচয়পত্র বা পরিষেবা, এমনকি নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্যও আধার ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু, নতুন ব্যবস্থা কার্য়কর হলে, অ-নাগরিকদের জন্য এইভাবে আধারের অপব্যবহার করা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে বলে সরকারি আধিকারিকরা মনে করছেন।  

আধার কার্ড হারিয়ে বা চুরি হলে কী করবেন? 
আধার কার্ড যদি হারিয়ে যায় বা চুরি যায়, তা হলে ইউআইডিএআই-এর টোল-ফ্রি নম্বর ১৯৪৭-এ বা ইউআইডিএআই-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে জানানো যেতে পারে। তা হলে আর কেউ জালিয়াতি করতে পারবে না। আধার নম্বর পুনরুদ্ধার করা বা নতুন কার্ড হাতে পাওয়াও সমস্যার নয়। তার জন্যও কিছু পদ্ধতি আছে।

নতুন ই-আধার পেতে কী করবেন?
১) নতুন আধার কার্ড পেতে ইউআইডিএআই-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘লস্ট ইউআইডি (ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর)/ইআইডি (এনরোলমেন্ট আইডি)’ অপশনে ক্লিক করুন।
২) এ বার ‘ডাউনলোড আধার’ অপশনে যান।
৩) আপনাকে আধার নম্বর ও ক্যাপচা দিতে বলা হবে। যদি নম্বর মনে না থাকে তা হলে ১৯৪৭ নম্বরে ফোন করে যোগাযোগ কেন্দ্রের এজেন্টের সঙ্গে কথা বলেও আধারের এনরোলমেন্ট নম্বর পেতে পারেন।
৪) আধার নম্বর দেওয়ার পরে আপনাকে ৪ সংখ্যার ওটিপি দিতে বলা হবে। ওটিপি পাঠানো হবে মোবাইল নম্বরে।
৫) ওটিপি দিয়ে ‘সাবমিট’–এ ক্লিক করুন।
৬) আধার কার্ড পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবেন।