মিল্টন সেন, হুগলি: হুগলীর ব্যান্ডেল থেকে দুষ্কৃতীদের একটি গ্যাং-কে গ্রেপ্তার করলো চুঁচুড়া থানার পুলিশ। গত ১৮ জুলাই রাতে উত্তরপাড়া ও চুঁচুড়ায় জোড়া ছিনতাই এর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল গোটা জেলায়। গত ১৮ জুলাই রাতে হাওড়া গোলাবাড়ির ব্যবসায়ী রহিত সাউ চন্দননগর থেকে লোকাল ট্রেনে হাওড়া ফিরছিলেন। উত্তরপাড়া স্টেশনে ট্রেন থামার পর ছাড়তেই তাঁর হাত থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে নেমে পরে এক যুবক। তখন ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। ব্যবসায়ী চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ মেরে নামতে গিয়ে পরে যান। উঠে ছিনাতাইকারীকে ধাওয়া করেন। কাছাকাছি পৌঁছে তাকে ধরতে গেলে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী। প্ল্যাটফর্মে পরে গিয়ে মাথায় চোট পান ব্যবসায়ী। তারপরও উঠে ছিনতাইকারীর পিছু নেন। স্টেশনের কাছেই জনা তিনেক যুবক তখন আড্ডা দিচ্ছিলেন। তাঁদের বলেন সাহায্য করতে। বাইক নিয়ে ছিনতাইকারীকে ধরার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু একটি গলিতে অন্ধকারে মিলিয়ে যায় ছিনতাইকারী। পরে ওই যুবকরাই আহত ব্যবসায়ীকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য।

আরও পড়ুন: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুলসংখ্যক স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ


সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি মোবাইল ছিনাতাই এর ঘটনা ঘটেছে হুগলীর উত্তরপাড়া সহ নানা প্রান্তে, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন নাগরিকরা। অন্যদিকে, গত ১৮ই জুলাই চুঁচুড়া থানার অন্তর্গত ব্যান্ডেল কৈলাস নগরে অনুষা রায় নামে এক যুবতীর ব্যাগ ছিনতাই এর ঘটনা ঘটে। ভর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ যুবতী তাঁর মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এক বাইক আরোহী সে সময় গতিতে এসে আর ব্যাগ ধরে টান মারে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। ব্যাগের মধ্যে মোবাইল ফোন, এটিএম কার্ড, আধার, প্যান কার্ড, বাড়ির চাবি ছিল। যুবতীর চেঁচামেচিতে এলাকার লোক জড়ো হয়ে যায়। ততক্ষণে যদিও দুষ্কৃতী এলাকা থেকে পালিয়েছে।


তারপর ব্যান্ডেল ফাঁড়িতে গিয়ে অভিযোগ জানান অনুষা। তিনি বলেন, কালো বাইক নিয়ে এসেছিল ওই যুবক। ছাই রঙের গেঞ্জি পড়া, মুখে চাপ দারি। মাথায় হেলমেট ছিল না। গোটা ঘটনাগুলি নিয়ে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারের আধিকারিকরা বিভিন্নভাবে তদন্তে নামেন। নানা গোপন সূত্র ধরে এবং নানা প্রান্তের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে গতকাল রাতে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের চুঁচুড়া থানার আধিকারিকরা একটি সূত্র মারফত অজিত মণ্ডল, রোহন দাস, গুড্ডু স্বামী, রাজ সাঁতরা ওরফে ভিক্টর নামক চারজনের একটি দুষ্কৃতি গ্যাং কে ধরতে সক্ষম হন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এরা নানা অসামাজিক মূলক কাজ—চুরি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত।

তাদের থেকে প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ তদন্তের মধ্যে দিয়ে নানা তথ্য পেতে সক্ষম হন। প্রাথমিক অবস্থায় তাদের থেকে দশটি ফোন উদ্ধার করা হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চারজনের মধ্যে অজিতের কাছে বাকিরা নানা ফোন বিক্রি করতে আসতো। এবং পরবর্তী সময় অজিত ওই ফোনগুলি নানা প্রান্তে বিক্রি করতো। আজ ধৃত চারজনকে চুঁচুড়া আদালতে পেশ করে পুলিশ। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই গ্যাংয়ের মাধ্যমে তদন্তে নানা বিষয় পরবর্তী সময়ে উঠে আসতে পারে, যা সকলকে হতচকিত করতে পারে।