পায়ের ত্বকে চুলকানি অনেকেই খুব একটা পাত্তা দেন না। তুচ্ছ উপসর্গ ভেবে এড়িয়ে যেতে দেখা যায়। কিন্তু অনেক সময় এটি মারাত্মক রোগের লক্ষণ হতে পারে যা একেবারেই উপেক্ষা করা উচিত নয়। তাহলে ঠিক কোন কারণে পায়ের চুলকানি হয়? কীভাবেই বা সুস্থ থাকবেন? জেনে নিন-
কেন পায়ের চুলকানি হয়
১. শুষ্ক ত্বকঃ শুষ্ক বাতাস, রোজ গরম জলে স্নান, নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করা-এই সব কারণে প্রায়ই ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে দেয়। যার ফলে চুলকানি এবং ত্বক ফেটে যেতে পারে।
২. ছত্রাক বা ফাঙ্গাস সংক্রমণঃ পায়ের আঙুলের মাঝে “অ্যাথলেটস ফুট” নামে পরিচিত ছত্রাক সংক্রমণে জ্বালা, লালচে ফোস্কা ও চুলকানি হতে পারে। বন্ধ জুতা পরলে, স্নানের পরে সঠিকভাবে পা শুকনো না রাখলে ছত্রাককের সংক্রমণ বেড়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ কিডনি ঝাঁঝরা হওয়ার আগে সতর্কবার্তা দেয় চোখ! এই সব লক্ষণ উপেক্ষা করলেই তিলে তিলে শেষ হবে শরীর
৩. ত্বকের রোগঃ চর্মরোগ যেমন একজিমা বা কোন্টাক ডার্মাইটিস ত্বককে উদ্দীপিত করে, লালচে দাগ, ফোলা ও চুলকানি সৃষ্টি করে। পছন্দের সাবান বা ডিটারজেন্ট বদলে গেলে এলার্জির আশঙ্কা বাড়ে।
৪. ডায়াবেটিস ও রক্তসঞ্চালন বা স্নায়ুবিক সমস্যাঃ ডায়াবেটিসের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হলে ত্বকের শুষ্কতা বাড়ে। নিউরোপ্যাথি হলে স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে, যা পায়ের অনুভূতি কমিয়ে দেয় এবং চুলকানি ও ঝিনঝিন অনুভূতি তৈরি করতে পারে।
৫. বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যাঃ কিডনির রোগ, লিভারের অসুখ, থাইরয়েডের সমস্যায় শরীরে বিষাক্ত পদার্থ বা রক্তে অস্বাভাবিক উপাদান জমে গেলে ত্বককে প্রভাবিত করতে পারে। ফলে পায়ে চুলকানি হয়।
৬. অ্যালার্জি ও বাহ্যিক বিষয়ঃ নতুন জুতা, আটোঁসাটো মোজা, রাসায়নিক সাবান, ডিটারজেন্ট ইত্যাদির সংস্পর্শ হলে ত্বক নানা ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। এক্ষেত্রে চুলকানি, লালচে ভাব, ফোস্কা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

কখন সতর্ক হওয়া প্রয়োজন
* চুলকানি দীর্ঘস্থায়ী হলে বা স্বাভাবিক যত্নে না কমলে।
* চুলকানির সঙ্গে লাল ফোস্কা, রক্তপাত, ওষুধের প্রতিক্রিয়া, শর্করার অবস্থা খারাপ হওয়া বা ত্বক ফেটে গেলে ত্বকে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে।
* যদি অন্য কোনও রোগের লক্ষণ থাকে যেমন ডায়াবেটিস, কিডনি বা লিভার সমস্যা, থাইরয়েড ইত্যাদি তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
১. পা পরিষ্কার ও শুকনো রাখাঃ পা জলে ভিজে থাকুক বা না থাকুক, শুধু ভালভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। বিশেষ করে আঙুলের ফাঁকগুলোয় জল জমতে দেবেন না।
২. উপযুক্ত জুতা ও মোজা ব্যবহারঃ খুব টাইট জুতা এবং মোজা পরলে এই সমস্যা বাড়তে পারে। তাই খানিকটা হালকা জুতো-মোজা পরুন।
৩. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারঃ শুকনো ত্বক মসৃণ ও হাইড্রেটেড রাখুন। বেশি শুষ্ক হলে ত্বক ফাটবে ও চুলকানি বাড়বে।
৪. প্রয়োজনে ওষুধ লাগানঃ ছত্রাক হলে অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা স্প্রে; চর্মরোগ হলে স্টেরয়েড বা অ্যান্টিহিস্টামিন; ডায়াবেটিস বা অন্য কোনও রোগ থাকলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
৫. প্রথমেই সতর্কতাঃ নতুন সাবান, জুতা বা অন্য কোনও উপাদান ব্যবহার করলে যদি ত্বকে খসখসে ভাব, লালচে ভাব বা চুলকানি বাড়ে তাহলে সেটি বন্ধ করুন।
