আজকাল ওয়েবডেস্ক: এই ডিজিটাল যুগে সম্পর্কের সমীকরণ বদলে গিয়েছে অনেকটাই। এখন সামনাসামনি কথা হওয়ার চেয়েও ভাবনার আদানপ্রদান বেশি হয় মোবাইল স্ক্রিনে। ‘নীল টিক’, ‘লাস্ট সিন’ আর ‘অনলাইন’ স্টেটাসের এই দুনিয়ায় সঙ্গীর পাঠানো একটি মেসেজই হয়ে উঠতে পারে সম্পর্কের আয়না। তাঁর বার্তার ধরন, উত্তর দেওয়ার গতি এবং শব্দের ব্যবহার- এই সব কিছুর মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে তাঁর আসল মনোভাব। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সঙ্গীর মেসেজ করার পদ্ধতিই আপনাকে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিতে পারে যে, তিনি এই সম্পর্কে আদৌ কতটা আন্তরিক।
এক কথার উত্তর
আপনি হয়তো নিজের সারাদিনের কর্মকাণ্ড বা অনুভূতি নিয়ে একটি দীর্ঘ মেসেজ পাঠালেন। উত্তরে পেলেন শুধু ‘Hmm’, ‘K’, ‘আচ্ছা’ বা একটি ইমোজি। ব্যস্ততার কারণে এক-আধ বার এমনটা হতেই পারে। কিন্তু এটাই যদি অভ্যাসে পরিণত হয়, তবে তা চিন্তার বিষয়। মনোবিদদের মতে, এই ধরনের সংক্ষিপ্ত উত্তর আসলে কথোপকথনে অনীহারই প্রকাশ। যিনি আপনার প্রতি আগ্রহী, তিনি সব সময়েই আপনার কথার পিঠে কথা বলার বা আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
প্রশ্ন করার অনীহা
একটি সুস্থ সম্পর্কে আদানপ্রদান দ্বিমুখী হয়। আপনি সারাদিন তাঁর খোঁজ নিচ্ছেন। ‘খেয়েছ?’, ‘কেমন কাটল দিনটা?’, ‘অফিসে সব ঠিক আছে?’। কিন্তু উল্টোদিক থেকে আপনার প্রতি সামান্য কৌতূহলও প্রকাশ পাচ্ছে না। আপনার দিন কেমন কাটল বা আপনার শরীর কেমন আছে, সে সব নিয়ে তাঁর কোনও প্রশ্নই নেই। এই একতরফা খোঁজখবর নেওয়া যদি চলতেই থাকে, তবে বুঝতে হবে সম্পর্কটিও হয়তো একতরফাই হয়ে গিয়েছে, যেখানে আপনার ভাবাবেগের কোনও মূল্য নেই।
কথোপকথন শুরু করার দায় কি কেবল আপনার?
একবার ভেবে দেখুন তো, তিনি শেষ কবে নিজে থেকে মেসেজ করেছিলেন? প্রতিদিন সকালে ‘সুপ্রভাত’ বার্তা পাঠানো থেকে শুরু করে রাতে ‘শুভরাত্রি’ বলা, সবকিছুর দায় কি একা আপনার? যদি দেখেন, আপনি মেসেজ না করলে দিনের পর দিন কোনও কথাই হয় না, তবে এটি একটি স্পষ্ট সঙ্কেত যে, সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখার সমস্ত চেষ্টা একা আপনিই করে চলেছেন।
আরও পড়ুন: পর্ন দেখলে লিঙ্গ শিথিলতার আশঙ্কা বাড়ে? বিস্ফোরক তথ্যে চিন্তা বাড়ালেন গবেষকরা
দীর্ঘ নীরবতা এবং অজুহাত
ব্যস্ত জীবনে সকলেই কোনও না কোনও কাজে আটকে থাকেন। মেসেজ দেখার পরেও উত্তর দিতে দেরি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু দিনের পর দিন যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আপনার মেসেজ ‘আনরিড’ হয়ে পড়ে থাকে এবং তার কোনও গ্রহণযোগ্য কারণ না থাকে, তবে তা স্পষ্ট অবহেলার ইঙ্গিত। যিনি আপনাকে গুরুত্ব দেবেন, তিনি হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও এক মুহূর্ত সময় বের করে আপনাকে তা জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, কেবল মেসেজের উপর ভিত্তি করে কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া বুদ্ধিমত্তার কাজ নয়। হয়তো আপনার সঙ্গী নিজের অনুভূতি মেসেজে প্রকাশ করতে ততটা স্বচ্ছন্দ নন। তাই ডিজিটাল পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে সামনাসামনি কথা বলাই শ্রেয়। কারণ সম্পর্কের গভীরতা মেসেজের অক্ষরে নয়, চোখের ভাষাতেই সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট হয়।
