আপনি কি অতিরিক্ত পিটপিটে স্বভাবের? সামান্য ধুলোময়লা দেখলেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে ঘর পরিষ্কার করেন? নিজে তো বটেই বাড়ির সবার সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে ঘন ঘন হাত ধুতে বলেন। বা অন্যান্য হাইজিন মেনে চলেন? অজান্তেই ভাল করতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করে বসছেন না তো? গবেষণা তাই বলছে কিন্তু! 
অতিরিক্ত হাইজিন মেনে চললে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয় না। বরং দুর্বলতা বৃদ্ধি পায়। কমে যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। রুগ্ন হয়ে পড়ে। 

মানব ইতিহাসের বলছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তখনই বৃদ্ধি পায় যখন ধুলো, পশু, প্যারাসাইট, প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির মধ্যে বাঁচি। অতিরিক্ত পয়পরিষ্কার থেকে নয়, উক্ত জিনিসই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোনও দেওয়াল নয় যা রোগ, জীবাণুকে আটকে দেয়। বরং এটা এমন একটা সিস্টেম যা ওই জীবাণুর উপস্থিতিতে অনবরত সেটাকে প্রতিহত করতে শেখে। অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বা রোগ, জীবাণুমুক্ত ঘরে থাকার জন্য মানব শরীর নির্মিত হয়নি। 

লক্ষ্য করলে দেখবেন, যে শিশুরা বাড়ির পোষ্যর সঙ্গে, মেঝেতে খেলে, বাইরে ঘুরে বড় হয়েছে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সেই সমস্ত শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি যাদের বাইরের খাবার খাওয়ানো হয় না, বাড়ি থেকে বের করলেও প্রায় তুলোয় মুড়ে রাখা হয়, ধুলো ধোঁয়া ঘেঁষতে দেওয়া হয় না। এর মূল কারণ, মাইক্রোবিয়াল এক্সপোজার যেই মুহুর্তে কমে যায়, সেই মুহূর্তেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হতে পারে না। কোন রোগের সঙ্গে কীভাবে শরীর মোকাবিলা করবে, বা করা উচিত সেটাই বুঝে উঠে প্রস্তুতি নিতে পারে না। 

উক্ত কারণেই বৃদ্ধি পায় একাধিক সমস্যা, যেমন অ্যালার্জি, অ্যাজমা, অটোইমিউন ডিজিজ, ইত্যাদি। জীবাণু জিতে যাচ্ছে, বা শক্তিশালী সেটা কিন্তু নয়। কারণ, রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম কখনও শেখেনি যে কী করে সেটাকে প্রতিহত করতে হয়।

তার মানে কি হাইজিন মেনে চলবেন না? নোংরা হয়ে থাকবেন? একেবারেই জুন বেসিক যে হাইজিন বা ভাল অভ্যাসগুলো আছে সেগুলো মেনে চলবেন। যেমন হাত ধোয়া, বাইরে দিয়ে এলে পা ধোয়া। পরিষ্কার খাবার খাওয়া, ইত্যাদি। কিন্তু ঘন ঘন স্যানিটাইজ করার বাতিক, ধুলো, ধোঁয়াকে ভয় পাওয়া, পশু, প্রকৃতি, মাটির সঙ্গে কোনও রকম কোনও সংযোগ না রাখা ক্ষতিকর।