শরীরের সুস্থতায় প্রোটিন অপরিহার্য। আমাদের মাংসপেশি, হাড়, হরমোন, এনজাইম, এমনকী কোষ গঠনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন। বিশেষ করে যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, খেলোয়াড কিংবা বয়সের কারণে যাদের পেশি ক্ষয়ে যাচ্ছে তাঁদের বেশি প্রোটিন দরকার। তবে অতিরিক্ত অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়া কিন্তু শরীরের জন্য মোটেই ভাল নয়। বেশি প্রোটিন খেলে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। 

কতটা প্রোটিন দরকার

পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন শরীরের প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী প্রোটিনের পরিমাণ হওয়া উচিত প্রায় ০.৮ গ্রাম। অর্থাৎ একজন ৭০ কেজি ওজনের মানুষকে দৈনিক প্রায় ৫৬ গ্রাম প্রোটিন খাওয়াই যথেষ্ট। তবে অনেকেই ‘বডি বিল্ডিং’ বা ‘ফিটনেস ডায়েট’ এর নাম করে এই পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি প্রোটিন খেয়ে থাকেন। এমনকী অনেকে শরীরের প্রতি পাউন্ড ওজনে এক গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করেন, যা দীর্ঘমেয়াদে কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গের ওপর চাপ বাড়ায়।

আরও পড়ুনঃ আপনি কতদিন বাঁচবেন? ৫টি সহজ পরীক্ষাই বলে দেবে আপনার আয়ুর রহস্য, জানালেন ফিটনেস কোচ

অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়ার ক্ষতিকর দিক

১. কিডনির ক্ষতি – অতিরিক্ত প্রোটিন ভাঙতে কিডনিকে বেশি কাজ করতে হয়। এর ফলে কিডনিতে চাপ পড়ে এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনি স্টোন কিংবা কিডনি ফেইলিউরের ঝুঁকি তৈরি হয়।


২. হৃদরোগের সম্ভাবনা – প্রোটিনের উৎস যদি হয় লাল মাংস, প্রসেসড মিট বা অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত প্রাণীজাত তবে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকিও বহুগুণ বেড়ে যায়। 


৩. হজমের সমস্যা – একঘেয়ে প্রোটিন-ডায়েট কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, পেট ফাঁপা ও হজমে গোলযোগ তৈরি করে।


৪. ক্যানসারের ঝুঁকি – দীর্ঘদিন অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিন খেলে কোলন ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়তে পারে।

আরও পড়ুনঃ কমবয়সিদের জীবন সংশয় তৈরি করছে ব্রেন স্ট্রোক! কোন কোন উপসর্গ দেখে আগে থেকে সাবধান হবেন ? লক্ষণ চেনালেন বিশিষ্ট চিকিৎসক

নিরাপদে প্রোটিন বাড়ানোর উপায়

•    সচেতনভাবে প্রোটিনের উৎস বাছুন। মাছ, ডিম, দুধ, ডাল, বাদাম ও চর্বিহীন মাংস হল ভালো বিকল্প।
•    প্রোটিন যেন দৈনিক মোট ক্যালোরির ১০ থেকে ৩৫ শতাংশ অতিক্রম না করে সেদিকে খেয়ার রাখুন। 
•    ডায়েটে বৈচিত্র্য রাখা জরুরি। শুধু প্রোটিন নির্ভর খাদ্যাভ্যাসে না গিয়ে শাকসবজি, শস্য, ফল ইত্যাদির সঠিক সমন্বয় রাখতে হবে।
•    বিশেষ করে যারা হাই-প্রোটিন ডায়েট শুরু করতে চান, তাদের ডায়েটিশিয়ান বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


প্রোটিন নিঃসন্দেহে শরীরের জন্য জরুরি, কিন্তু ‘অতিরিক্ত ভালও খারাপ হতে পারে’ — এই প্রবাদ এখানেও সত্যি। তাই শুধু বেশি প্রোটিন নয়, সুষম খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি