এই সপ্তাহের শুরুতে স্বল্প বিরতির পর আবারও সোনার ও রুপার দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। বিশ্বের অনিশ্চয়তা, নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা এবং দুর্বল ডলারের প্রভাবে দাম আবার শক্তি ফিরে পাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গত কয়েক সেশনের সংশোধন আসলে একটি “শ্বাস নেওয়ার পর্ব”, উল্টো ঘুরে যাওয়া নয়—এবং এই র্যাকলির এখনও আরও কিছুটা পথ বাকি।
2
11
শুক্রবার সকালে এমসিএক্সে (MCX) সোনার ফিউচার প্রতি ১০ গ্রামে প্রায় ১.২১ লাখ টাকায় এবং রুপা প্রতি কিলোগ্রামে ১.৪৮ লাখ টাকার উপরে লেনদেন হচ্ছিল। উভয় ধাতুই এক সপ্তাহের নিম্নতম স্তর থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে দুর্বল মার্কিন ডলার এবং নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা।
3
11
মাঝে মাঝে মুনাফা তোলার প্রবণতা দেখা গেলেও বুলিয়ন মার্কেটের সামগ্রিক মনোভাব এখনও শক্তিশালী। মূল্যবান ধাতুগুলো ইতিবাচক সূচনায় লেনদেন শুরু করলেও দিনের শেষে কিছুটা চাপের মুখে পড়ে। তবে নিম্নস্তরে সোনা ও রুপা এখনও ভালোভাবে সমর্থিত।
4
11
মার্কিন সরকারের সম্ভাব্য শাটডাউন এবং ডলারের দুর্বলতা বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ সম্পদের দিকে টানছে। চলতি রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং দুর্বল মার্কিন অর্থনৈতিক তথ্য সোনাকে নতুনভাবে উর্ধ্বমুখী হতে সহায়তা করছে। টেকনিক্যাল দিক থেকে, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার গুরুত্বপূর্ণ ‘মেক-অর-ব্রেক’ স্তর ৩,৮৫৫ ডলার এবং রুপার সমর্থন অঞ্চল ৪৬.৭০ ডলারে রয়েছে।
5
11
টাকার ভিত্তিতে সোনার সাপোর্ট স্তর ১,১৯,৮৭০–১,১৯,২৮০ টাকার মধ্যে, এবং রেজিস্ট্যান্স ১,২১,০৯০–১,২১,৬০০ টাকায়। রুপার ক্ষেত্রে সাপোর্ট ১,৪৫,৭৫০ টাকা এবং রেজিস্ট্যান্স প্রায় ১,৪৮,৩৪০ টাকায়।
6
11
মার্কিন অর্থনীতিতে গভীরতর সংকট এবং ব্যাপক ছাঁটাইয়ের খবর সোনাকে আবারও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে আকর্ষণীয় করে তুলছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহৎ আকারের চাকরি হারানো এবং সরকারী শাটডাউন নিশ্চিত হওয়ার পর সোনা ও রুপা এখন পরবর্তী ঊর্ধ্বমুখী পর্যায়ের ভিত্তি গড়ে তুলছে।
7
11
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অক্টোবর মাসে ছাঁটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৫৩,০৭৪ জনে, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ১৮৩% বেশি—২০০৩ সালের পর এটিই সবচেয়ে খারাপ অক্টোবর। ২০০৯ সালের পর এ বছরই সবচেয়ে বেশি ছাঁটাইয়ের বছর। সরকারি কাজকর্ম বন্ধ থাকায় বিনিয়োগকারীরা এখন বেসরকারি সূত্রের তথ্যের উপর নির্ভর করছেন।
8
11
দুর্বল শ্রমবাজারের এই চিত্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা জোরদার করেছে যে, ফেডারেল রিজার্ভ হয়তো এখন আরও “সহনশীল” বা নরম মুদ্রানীতি নিতে বাধ্য হবে—যা সাধারণত সোনার মতো নন-ইয়েল্ডিং সম্পদের পক্ষে যায়।
9
11
সোনা এখন টেকনিক্যাল ও ফান্ডামেন্টাল—দুই দিক থেকেই সমর্থন পাচ্ছে। স্বল্প মেয়াদে দামের ওঠানামা অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী কয়েক সেশনে সোনা ১,১৯,৫০০–১,২২,৫০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করতে পারে।
10
11
বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্বল্পমেয়াদে সোনা-রুপার বাজার সীমিত পরিসরে ঘুরবে, তবে সামগ্রিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকবে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম যদি ৪,০২৫–৪,০৫৫ ডলারের উপরে স্থায়ীভাবে অবস্থান নেয়, তাহলে নতুন উচ্চতা স্পর্শ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
11
11
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ক্রমবর্ধমান ছাঁটাই এবং দুর্বল ডলারের প্রভাবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—ম্যাক্রো পরিস্থিতি এখনও বুলিয়ন বাজারের পক্ষে। র্যা লি হয়তো কিছুদিন থামতে পারে, তবে “সোনার জৌলুস এখনই ফিকে হচ্ছে না।