এ আর রহমানের সঙ্গে সায়রা বানুর বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে এখনও চর্চা থামেনি। দীর্ঘ ২৯ বছরের বিবাহিত জীবনে এবার বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন রহমান-সায়রা। একই সঙ্গে রহমানের গানের দলের সদস্য, গিটারিস্ট মোহিনী দের বিয়ে ভাঙায় রহমানের সঙ্গে তাঁর প্রেমচর্চাও শুরু হয়।
কিন্তু নিজেদের বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি সায়না। বরং বারবার রহমানকে 'সেরার সেরা' বলে অভিহিত করেছেন। এর আগে তাঁদের বিচ্ছেদের চর্চায় সায়রা বানু, জানিয়েছিলেন গত কয়েক মাস ধরে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি জানিয়েছিলেন এই মুহূর্তে চেন্নাইতে নেই। কিন্তু রহমানকে কটুক্তি না করতে অনুরোধ করেছিলেন।রহমানকে একজন রত্ন, বিশ্বের সেরা মানুষ বলেও অভিহিত করেছিলেন সায়রা।

এদিকে, অস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান দীর্ঘদিন ধরে কর্মব্যস্ত জীবনের কারণে পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো হারিয়ে ফেলেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তাই তিনি এখন সচেতনভাবে নিজের কর্মজীবনের গতি ধীরে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর মতে, সাফল্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে মানুষ কখনও কখনও জীবনকেও মিস করে ফেলে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রহমান জানান, এক সময় তিনি প্রায় অবিরাম কাজ করে গিয়েছেন। দিন-রাত একাধিক ছবির সঙ্গীত পরিচালনায় ব্যস্ত থাকতেন। ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ, কাজের চাপ, সবকিছুই তাঁকে এক ধরনের অস্থিরতায় ফেলে রেখেছিল। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আপনি যতই পরিকল্পনা করুন না কেন, অনেক কিছু আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তখন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। আমিও সেইভাবে এগিয়েছি।”
আরও পড়ুন: বিরাট চমক 'বিগ বস ১৯'-এর ঘরে! তানিয়া মিত্তলের মুখোশ খুলে কোন অভিযোগ আনলেন প্রাক্তন প্রেমিক?
রহমান জানান, নিরন্তর কাজ করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেননি কীভাবে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, ব্যক্তিগত সুখ-আনন্দ উপভোগ করা—এসবই যেন কর্মব্যস্ততার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছিল। তাই তিনি এখন ইচ্ছাকৃতভাবেই কাজের চাপ কমিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি অনেক কিছু কমিয়ে দিয়েছি। এখন আমি জীবনের আনন্দ নিতে পারি, নতুন কিছু শিখতে পারি, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারি, তবুও কাজ চালিয়ে যেতে পারি।”
শিল্পীর এই সিদ্ধান্ত শুধু কর্মজীবনের ক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গেও সম্পর্কিত। প্রায় তিন দশক ধরে স্ত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে সংসার করলেও সম্প্রতি তাঁদের সম্পর্কে ভাঙনের ইঙ্গিত মিলেছে। সরাসরি সেই প্রসঙ্গ না তুললেও রহমানের কথায় পরিষ্কার, জীবনের এই পর্যায়ে এসে তিনি সম্পর্ক, মানসিক শান্তি এবং পরিবারের গুরুত্বকে বেশি করে উপলব্ধি করছেন। তিন সন্তানের জনক রহমান এখন নতুন করে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোকে জীবনের অগ্রাধিকার মনে করছেন।
রহমানের এই উপলব্ধি তাঁর ভক্ত ও অনুরাগীদের জন্যও একটি বড় বার্তা বহন করে। সাফল্য ও অর্থের পেছনে ছোটা জীবনের একটি অংশ, কিন্তু তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল মানুষ হিসেবে নিজের প্রিয়জনের পাশে থাকা এবং ব্যক্তিগত সুখকে গুরুত্ব দেওয়া। সঙ্গীত জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তবে এবার তিনি প্রমাণ করলেন, জীবনের প্রকৃত সুর কেবল স্টুডিও বা মঞ্চেই নয়, পরিবারের হাসি-আনন্দ আর নিজস্ব শান্তির মধ্যেও লুকিয়ে থাকে।
