কর্মব্যস্ততার জীবনে ক্রমশ বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। শরীরচর্চার অভ্যাস নেই, জল কম খাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধতে থাকে কম বয়স থেকেই। দিন দিন বাড়ছে ক্রনিক কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি। সঙ্গে গলব্লাডার স্টোন বা পিত্তথলিতে পাথর জমার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। অল্প বয়সে পিত্তরসের ক্ষরণে বাধা এলে তখন সেই পিত্তরস পিত্তথলিতে জমে পাথর তৈরি করে। সাধারণত অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, হরমোনের গোলমাল, কোলেস্টেরলের বাড়বাড়ন্ত, দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা পিত্তথলিতে পাথর জমার কারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় হরমোনের ওঠানামাও মহিলাদের এই রোগকে উস্কে দেয়। 


কিডনি স্টোন হল কিডনির ভেতরে জমে থাকা খনিজ বা লবণ থেকে তৈরি শক্ত পাথর। এগুলো সাধারণত ডিহাইড্রেশন, খাদ্যাভ্যাস বা জেনেটিক কারণের জন্য হয়। লক্ষণ হিসেবে কোমর বা পেটের পাশে তীব্র ব্যথা, প্রস্রাবের সমস্যার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। গলব্লাডারের ভেতরে তৈরি হয় গলব্লাডার স্টোন এবং প্রধানত কোলেস্টেরল বা বিলিরুবিন জমা থেকে তৈরি হয়। গলব্লাডার ও কিডনিতে স্টোনের উপসর্গ অনেকটা এক রকম হওয়ায় অনেক সময়েই বুঝতে ভুল হয়। তাহলে কোন কোন লক্ষণ দুটি সমস্যা বুঝবেন? জেনে নিন- 

 

আরও পড়ুনঃ কিডনি-ফুসফুসের বারোটা বাজায় লিপস্টিক! জানেন আপনার প্রসাধনীর কোন উপাদান বাড়িয়ে দেয় মারণ রোগের ঝুঁকি?


১. পেটে বা পাশে হালকা ব্যথা: কিডনি স্টোন হলে কোমর বা পাশের অংশে ব্যথা অনুভূত হয়। গলব্লাডার স্টোন হলে উপরের ডান পাশে ব্যথা বা ভারী লাগতে পারে, বিশেষ করে তেলযুক্ত খাবার খাওয়ার পর।


২. খাওয়ার পর বমি বা অস্বস্তি: গলব্লাডার স্টোনের অন্যতম লক্ষণ বমি বা অস্বস্তি। তবে কিডনি স্টোনের ক্ষেত্রেও বমি বমি ভাব হতে পারে।


৩. মূত্রের পরিবর্তন: কিডনি স্টোনে মূত্র ঘোলা হতে পারে, দুর্গন্ধ বা রক্ত বেরতে পারে। গলব্লাডার স্টোন সাধারণত মূত্রে পরিবর্তন ঘটায় না।


৪ ঘন ঘন বা ব্যথাযুক্ত প্রস্রাব: কিডনি স্টোনের সাধারণ লক্ষণ হল ঘন ঘন বা ব্যথাযুক্ত প্রস্রাব। তবে গলব্লাডার স্টোন প্রস্রাবের সমস্যা সৃষ্টি করে না।


৫. ত্বক বা চোখে হালকা হলদেটে ভাব (জন্ডিস): গলব্লাডার স্টোনে যদি পিত্তনালী বন্ধ হয়, ত্বক বা চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যেতে পারে। কিডনি স্টোনে সাধারণত এই উপসর্গ দেখা যায় না।


কিডনি স্টোন হলে মূত্রের সমস্যা সহ কোমরে ব্যথা হতে পারে। গলব্লাডার স্টোন মূলত খাওয়ার পর অস্বস্তি, পেটের ডান পাশে ব্যথা ও কখনও জন্ডিস হতে পারে। গলব্লাডার স্টোন হোক বা কিডনি স্টোন, প্রাথমিক লক্ষণগুলো উপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।