আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বীরভূম সফরের মধ্যেই জেলায় দলের কোর কমিটির কনভেনার হিসেবে অনুব্রত মণ্ডলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আবার সফর শেষ হওয়ার পরেই অনুব্রতর নিরাপত্তা বাড়ানো হল। ফের তাঁকে 'ওয়াই প্লাস উইথ এসকর্ট' নিরাপত্তা দেবে রাজ্য পুলিশ। যার অর্থ আগের মতোই বীরভূম জেলা তৃণমূলের এই প্রাক্তন সভাপতির ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ও নিরাপত্তা রক্ষীরা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়। সেই অডিওতে বেশ কিছু আপত্তিজনক কথাবার্তা ছিল। যা নিয়ে ঝড় ওঠে রাজ্য রাজনীতিতে। এর পরেই অনুব্রতর নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত জানা যায়। তবে মঙ্গলবার রাত থেকেই নতুন করে আগের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের একাংশ জানিয়েছেন, প্রশাসনিক স্তরে পুনর্মূল্যায়নের পরেই অনুব্রতর নিরাপত্তা নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

এবিষয়ে বীরভূমের বিধায়ক এবং রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প ও কারা বিভাগের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানিয়েছেন, 'অনুব্রত মণ্ডলের নিরাপত্তা আগেও ছিল। মাঝে যে কোনও কারণে চলে যায়। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন অনুব্রতকে জেলা ঘুরতে হবে এবং এখানে ওখানে যেতে হবে। সেটা কখনও দিন হতে পারে আবার কখনও রাত। যেটা অনুব্রত আগেও করেছেন। তাই তিনি বুঝেই এটা বাড়িয়েছেন। এটাতে তো অসুবিধা কিছু নেই। অনুব্রত তাঁর কাজ দেখাতে পেরেছেন বলেই এটা হয়েছে।' 

ভিন রাজ্যের বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার এবং বাংলা ভাষার 'অসম্মান'-এর অভিযোগে বীরভূমে তৃণমূল সুপ্রিমো এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সম্প্রতি 'ভাষা আন্দোলন'-এর সূচনা করেন। এই উপলক্ষে গত রবিবার তিনি বীরভূম পৌঁছন এবং সেদিন রাতেই তাঁর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার করেন অনুব্রত। যদিও সেই বৈঠকে নেত্রীর সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খোলেননি অনুব্রত। পরদিন সোমবার মিছিলের পরেই বীরভূমের কোর কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই অনুব্রতকে কমিটির কনভেনার করা হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ জম্মু কাশ্মীরে ফের দুুর্ঘটনা! সিন্ধু নদে বাস পড়ে ইন্দো-তিব্বতীয় পুলিশকর্মীদের ভয়াবহ অবস্থা, চলছে উদ্ধারকাজ ...

এর আগে যখন গরু পাচারের অভিযোগে অনুব্রতকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে গ্রেপ্তার করা হয় তখন তিনি ছিলেন বীরভূম জেলার দলের সভাপতি। গ্রেপ্তারের পরেও তাঁকে সভাপতি পদ থেকে সরায়নি দল। কিন্তু গত মে মাসে যখন জেলায় জেলায় দলের সভাপতি ও চেয়ারম্যানদের তালিকা প্রকাশ করা হয় তখন দেখা যায় সভাপতি হিসেবে অনুব্রতর নাম নেই। জেলায় দলীয় কাজের জন্য দলের তরফে গড়ে দেওয়া কোর কমিটির উপরেই আস্থা রেখেছিল তৃণমূল। যদিও কমিটির সদস্য হিসেবে অনুব্রতকে এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। দলের এই সিদ্ধান্তের পর মুষড়ে পড়েন জেলায় অনুব্রতর অনুগামীরা। কিন্তু তাঁকে ফের কোর কমিটির কনভেনার করার পরেই আবার উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন তাঁরা। জেলায় অনুব্রতর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে অনেকের মুখেই শোনা যায় কাজল শেখের নাম। কাজল নিজেও কোর কমিটির সদস্য। সোমবার সকল সদস্যদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে বৈঠক করেছেন সেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সকলকেই একসঙ্গে মিলেমিশে চলতে হবে।

আরও পড়ুনঃ স্বামীর খুনের অভিযোগে প্রাক্তন রসায়ন অধ্যাপিকার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, হাইকোর্টে নিজেই লড়লেন মামলা