আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার ভোররাতে উত্তরপ্রদেশের বারাবঁকি জেলার আওসানেৎশ্বর মহাদেব মন্দিরে ভয়াবহ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল অন্তত দুই জন ভক্তের। আহত হয়েছেন আরও ১৯ জন। পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৩টা নাগাদ মন্দিরে জড়ো হওয়া ভক্তদের উপর আচমকা একটি বিদ্যুতের তার পড়ে যায়, যার ফলে হুড়োহুড়ি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা শাসক শশাঙ্ক ত্রিপাঠী জানান, “সোমবার শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবারে দর্শনের জন্য ভোর থেকেই ভক্তরা জমা হয়েছিলেন। সেই সময় কিছু বানর ওভারহেড বৈদ্যুতিক তারে লাফাতে থাকে, যার ফলে পুরনো ও ক্ষয়প্রাপ্ত তারটি ছিঁড়ে পড়ে টিনের ছাউনির ওপর। ছাউনিতে কারেন্ট ছড়িয়ে পড়ে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন অনেকেই।” পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে একজন হলেন মুবারকপুরা গ্রামের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সি প্রশান্ত। অপর ব্যক্তির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। দু'জনেরই মৃত্যু হয় ত্রিবেদিগঞ্জ কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
আরও পড়ুন: “অবসরের পর কোনও সরকারি পদ নেব না”: সাফ জানালেন ভারতের প্রধান বিচারপতি বি.আর. গাভাই
মন্দির চত্বরে পুলিশ বাহিনী আগে থেকেই মোতায়েন ছিল। ঘটনার পরপরই উদ্ধারকার্য শুরু করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনার তীব্র নজর নিয়েছেন এবং আহতদের চিকিৎসায় তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে, এর এক দিন আগেই, রবিবার, হরিদ্বারের মানসা দেবী মন্দিরেও ঘটে আরও একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। সেখানে আটজনের মৃত্যু হয় ও ৩০ জন আহত হন মন্দিরে উঠতে গিয়ে হুড়োহুড়ির ফলে। পুলিশ সূত্রে খবর, মন্দিরে প্রবেশপথের সিঁড়ির কাছে কারেন্ট ছড়ানোর গুজব ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কে মানুষ ছোটাছুটি শুরু করে, যার ফলে এই বিপর্যয় ঘটে।
আরও পড়ুন: বাংলাভাষী মুসলিমদের 'বাংলাদেশি' তকমা দিয়ে গণহারে উচ্ছেদ, হেনস্তা ও আটক দিল্লিতে, চুপ কেন্দ্র
হরিদ্বারের এসএসপি প্রমেন্দ্র সিং ডোবাল জানিয়েছেন, “সপ্তাহান্তে প্রচুর ভক্ত ভিড় করেছিলেন মানসা দেবী মন্দিরে। এটি ৫০০ ফুট উঁচু শিবালিক পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। প্রচণ্ড ভিড় এবং গুজবের জেরে হুড়োহুড়ি শুরু হয়।” উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং একটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা করেছেন। এই দুই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, বারবার সতর্কতা সত্ত্বেও শ্রাবণের ভিড় সামলাতে প্রশাসন কতটা প্রস্তুত থাকে? বারবার বিদ্যুৎ ও ভিড়জনিত দুর্ঘটনা কেন ঘটছে? প্রশাসনের গাফিলতি নাকি অব্যবস্থাপনাই দায়ী, তা নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চা।
