আজকাল ওয়েবডেস্ক: কিডনিতে পাথরের সমস্যার কথা আজকাল প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু সময়মতো এই সমস্যার চিকিৎসা করা না হলে তা ব্যথা ও মারাত্মক শারীরিক জটিলতার কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে।
কিডনিতে পাথর হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে, তার মধ্যে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে কারণ অজানা। বিভিন্ন রাসায়নিক গঠনের ভিত্তিতে কিডনিতে পাথরের প্রধানত ৩টি ধরন রয়েছে। যেমন—ইউরিক অ্যাসিড পাথর, ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর ও স্ট্রুভাইট পাথর।
ট্রিপল ফসফেট অর্থাৎ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট এবং ক্যালসিয়াম অক্সালেট, ক্যালসিয়াম ফসফেট—এগুলোর সংমিশ্রণে কিডনিতে পাথর তৈরি হয়।
শরীরে ক্যালসিয়াম বেড়ে গেলে, যেমন—যাদের প্যারাথাইরয়েড হরমোন আছে তাদের শরীরে প্যারাথাইরয়েড হরমোন বেড়ে গেলে ক্যালসিয়ামও বেড়ে যায়। আর শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর হতে পারে। মূত্রথলিতে কোনও সময় যদি প্রস্রাব জমা হয়ে থাকে তাহলে ইনফেকশন থেকে পাথর হতে পারে। শরীরের অন্যান্য মেটাবলিক বা বিপাকীয় পরিবর্তনের জন্য কিডনিতে পাথর হতে পারে।
কিডনিতে পাথর হলে ব্যথা অনুভূত হয়, পাথর কোথায় হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে ব্যথা বোঝা যায়। শরীরের দুই পাশে কিডনি থাকে, যে পাশে পাথর হয় বা কোমরে সবসময় মৃদু ব্যথা অনুভূত হওয়া। সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা, পাহাড়ে ওঠা কিংবা অতিরিক্ত দৌড়ঝাঁপ করলে ব্যথা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তক্ষরণ। কিডনি ফুলে যেতে পারে, পেটের মধ্যে চাকা অনুভূত হওয়া। দুই কিডনিতে বড় আকারের পাথর হলে কিডনি ফেইলিউর হতে পারে। কিডনিতে পুঁজ হতে পারে। কিছু পাথর আছে যেগুলোর কারণে কোনও ব্যথা অনুভূত হয় না। অন্য কোনও কারণে পরীক্ষা করতে গিয়ে হয়ত শনাক্ত হয় কিডনিতে পাথর হয়েছে।

এছাড়া পাথর আকারে যখন ছোট হয় তখন কিডনির রাস্তা বা ইউরেটারে চলে আসতে পারে। পাথর ইউরেটারে চলে আসলে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেমন—তীব্র ব্যথা, সাধারণত দেখা যায় এই ব্যথা কোমর থেকে শুরু হয় এবং পেটের নিচের দিকে চলে যায়। পাথর ইউরেটার বন্ধ করে দিতে পারে, যার ফলে কিডনি ফুলে যেতে পারে, কিডনিতে পুঁজ হতে পারে, কিডনি অকেজো করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: এই প্রাণীর ডিএনএ-তে রয়েছে মারণ ক্যান্সারের যম, অবাক হলেন গবেষকরা
পাথর যদি মূত্রথলিতে হয় তাহলে ঘনঘন প্রস্রাব হবে। অল্প একটু প্রস্রাব করার পর বন্ধ হয়ে যেতে পারে আবার শুরু হতে পারে অর্থাৎ প্রস্রাবে অসুবিধা হওয়া। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। আর পাথর যদি প্রস্রাবের রাস্তায় আটকে যায়, তাহলে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আবার মূত্রথলিতে পাথর হওয়ার কারণেও প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কিডনির পাথরের আকার যখন বড় হয়ে যায় তখন সেটি রোগীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেক সময় দেখা যায়, বারবার মূত্রনালির সংক্রমণ হচ্ছে, ভালো হচ্ছে না। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যায় কিডনিতে পাথর হয়েছে।
পাথর যদি কিডনির রাস্তা বন্ধ করে দেয়, পাথর যদি আকারে বড় হয়, ব্যথা থাকে তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কিডনিতে পাথরের চিকিৎসা না করলে ধীরে ধীরে কিডনি অকেজো বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
