সংবাদ সংস্থা মুম্বই: ২০২৩ সালে মণিপুরে মেইতেই রীতিতে বিয়ে করেছিলেন বলিউড অভিনেতা রণদীপ হুডা ও অভিনেত্রী লিন লাইশরাম। চারদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অস্ত্রের আওয়াজ—তার মাঝেই দুই সংস্কৃতির মিলনে হয়েছিল এক চিরস্মরণীয় পরিণয়।

 

সম্প্রতি  এক সাক্ষাৎকারে রণদীপ খোলাখুলি বললেন, তাঁর বিয়েতে কী কী নাটকীয়তা ঘটেছিল— খুলে বললেন তাঁর অচেনা, অবাক করা সেই অভিজ্ঞতার কথা ।রণদীপ জানান, পুরো বিয়ের রীতি তাঁর একেবারেই অজানা ছিল। তাই সঙ্গে ছিলেন একজন ‘হেল্পার’, যিনি তাঁকে প্রতিটি পদক্ষেপে গাইড করছিলেন।

 

রণদীপের কথায় -“একবার মাথায় পাগড়ি পরে নিলে, মাথা হেলানো চলবে না। বিয়ের আগে আমাকে একটি বাটি  আর একটি ছাতা দেওয়া হয়। বলা হয়, যদি প্রস্রাব লাগে, ছাতা খুলে নিজেকে আড়াল করে সেই বাটির মধ্যেই ই করতে হবে, কারণ আজকের এই মুহূর্তের জন্য তুমি-ই স্বয়ং ঈশ্বর! তাই এখন থেকে নড়া যাবে না।”

 

তিনি আরও বলেন,“ বিয়ের মণ্ডপে গিয়ে আমাকে এক কম্বলে মুড়ে বসানো হয়। সেখানে বিভিন্ন লয়ে বেজে চলেছিল একাধিক  মৃদঙ্গ, পন্ডিতদের মন্ত্রোচ্চার। কিন্তু আমি একটুও না নড়ে টানা দুই ঘণ্টা সোজা হয়ে বসেছিলাম।” এরপর মন্ডপে লিন এল। লিনেরও সঙ্গে ছিলেন এক 'শিক্ষক'। ওদের বিয়ের নিয়ম হচ্ছে বিয়ের সময় হাসা চলবে না। তবে নিয়ম ভেঙে  মুচকি হেসে ফেলেছিল লিন, তারপর ও কী বকুনিটাই না খেল! ‘হাসা বন্ধ করুন!' বলে ধমক খেয়েছিল।"

 

“হরিয়ানার সংস্কৃতি আর মণিপুরী কালচার একেবারে আলাদা। হরিয়ানিরা একটু কর্কশ, মণিপুরী কালচার অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ। লিনের গায়ে এত সোনা ছিল, আমি বললাম—‘এখন তো একটা সিনেমা বানানো যায়!’”

 

আর সবথেকে চমকে যাওয়ার কথা? “যখনই আমাদের সাত পাক শেষ হল, চারদিক থেকে একসঙ্গে শত শত একে-৪৭ রাইফেলের গুলি চলতে শুরু করল। মানে, একটা চলমান যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে আমরা বিয়েটা সারলাম।”


রণদীপ ও লিন প্রথম দেখা করেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহের থিয়েটার গ্রুপ মোটলে-তে। সেই বন্ধুত্বই সময়ের সঙ্গে গড়িয়ে গিয়েছিল প্রেমে। লিন এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন— “রণদীপ ছিলেন আমার সিনিয়র শিল্পী। বন্ধুত্ব থেকেই ধীরে ধীরে এই পথচলা শুরু।”

 

দীর্ঘদিনের প্রেম, সম্পর্ক নিয়ে কখনও খুব বেশি প্রকাশ্যে আসেননি তাঁরা। কিন্তু উৎসব-পার্বণে একসঙ্গে ছবি ভাগ করে নিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর সেই সম্পর্ককেই চিরস্থায়ী রূপ দিলেন মণিপুরের মাটিতে, পরম্পরার আবহে, গুলির শব্দের মধ্যেও।