আজকাল ওয়েবডেস্ক: কলকাতা ছেড়ে চলে গিয়েছেন  লিওনেল মেসি। কিন্তু রেখে গিয়েছেন দগদগে ঘা। রেখে গিয়েছেন গভীর ক্ষত। সেই ক্ষতে কবে প্রলেপ পড়বে কেউ জানে না। 

মেসি দেখলেন সুশৃঙ্খল হায়দরাবাদ। আর কলকাতার প্রিয় যুবভারতী ছেড়ে মেসি চলে যাওয়ার পরে ফেটে পড়লেন দর্শকরা। মাঠের দখল নিয়ে ফেললেন উন্মত্ত দর্শককূল। পুলিশ লাঠি নিয়ে তেড়ে গেল। পালটা রুখে দাঁড়ালেন জনগণ। গোটা মাঠ জুড়ে ছড়ানো রইল চেয়ারের ভগ্নাবশেষ।

গোলপোস্ট ভাঙা হল। মাঠের ক্ষয়ক্ষতি হল প্রচুর। এ সব দৃশ্য দেখে আর স্থির থাকতে পারলেন না বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন, মেসি আরও একটু ভাল ব্যবহার পেতেই পারত। অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং লজ্জাজনক ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল কলকাতা। 

মনোজ তিওয়ারি এক্স হ্যান্ডলে লিখলেন, ''আমার শহরে যা হল, তা দেখে আমি বাকরুদ্ধ। অত্যন্দ নিন্দনীয় ঘটনা। একজন আন্তর্জাতিক ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে আমি অনুভব করতে পারি কতটা বিব্রত হতে হয়েছে মেসিকে। আমরা সবাই মেসিকে ভালবাসি। তাঁকে ঘিরে এই মাদকতা যে হবে, তা আগে থেকেই অনুমিত ছিল। আয়োজক শতদ্রুকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ বিভাগকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কষ্টার্জিত অর্থ নিয়ে এবং বাংলার মানুষের আবেগ নিয়ে শতদ্রু যেভাবে খেলেছে, তাতে ওকে কড়া শাস্তি দেওয়া হোক। আরও একটা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি এবং অব্যবস্থার দৃষ্টান্ত স্থাপন করল শতদ্রু। ভাগ্যিস আজ আমি উপস্থিত ছিলাম না। সবসময়ে আমার মধ্যে সন্দেহ ছিল যে কলকাতায় বড় ধরনের অনুষ্ঠান করার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা কি শতদ্রুর মধ্যে রয়েছে! লিও মেসির মতো কিংবদন্তির আরও ভাল কিছু প্রত্যাশা করতেই পারতেন। আমি নিশ্চিত সরকার শতদ্রুর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে। কলকাতা এরকম জিনিস প্রত্যাশা করনি।''

মেসিকে নিয়ে অনেক আগে থেকেই তৈরি হচ্ছিল শহর কলকাতা। টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। যুবভারতী ভর্তি ছিল। মেসি মাঠে ঢুকতেই সমর্থকরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। কিন্তু মাঠের ভিতরের ভিড়ে মেসিকে আর দেখতে পাননি গ্যালারি দর্শকরা। পনেরো মিনিটের মতো মাঠে ছিলেন মেসি। তিনি মাঠ ছাড়তেই দর্শকদের ধৈর্যের বাধ ভাঙে। বৃষ্টির মতো উড়ে আসে বোতল। তার পরে মাঠের ভিতরে ঢুকে পড়েন উন্মত্ত জনতা। শুরু হয়ে যায় তাণ্ডব। 

মেসি কলকাতা ছেড়ে হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন। বিমানবন্দরেই শতদ্রু দত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। কলকাতা ভালবাসায়  মুড়িয়ে দিতে পারত মেসিকে। সেই সুযোগই পাওয়া গেল না। যে মাঠে মেসি খেলে গিয়েছেন ১৪ বছর আগে, সেই মাঠেই ধ্বংসের ছবি এঁকে গেল মেসির সফর।