আজকাল ওয়েবডেস্ক: এসআইআর আতঙ্কে ফের বাংলায় মৃত্যু। এবার এসআইআর আতঙ্কে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন বয়স ৫২ বছরের এক ব্যক্তি। ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতেই, আতঙ্কে চরম পদক্ষেপ করলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোররাতে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বালুভোরট গ্রামে। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। 

 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম আবুল কালাম। তাঁর বাড়ি বালুভোরট গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু বছর ধরে জয়পুরে থাকতেন তিনি। সেখানে হোটেলে কাজ করতেন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।একবছর ধরে বাড়িতে একাই থাকতেন। 

 

তবে ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড না থাকায়, ভয়ের চোটে এসআইআর ফর্মপূরণ করেননি আবুল। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা ও মায়ের নামও ছিল না। আতঙ্কে ভুগছিলেন তিনি। এসআইআর ফর্মপূরণ না করায়, তাঁকে ডিটেনশন ক্যাম্প ও বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছিলেন এলাকার কিছু মানুষ। সেই আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান অনেকের। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে। 

 

প্রসঙ্গত, এসআইআর আতঙ্কে বাংলায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসআইআর আতঙ্কে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে আগরপাড়ায়। প্রদীপ করের মৃত্যুতে প্রতিবেশীরা দাবি করেছিলেন, তাঁর ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। তবুও তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। তাই নিজেকে শেষ করে দেন। 

 

বীরভূমের ইলামবাজারে ক্ষিতীশ মজুমদার (৯৫) এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন বলেও তাঁর পরিবারের অভিযোগ। পানিহাটির প্রদীপ করের পর প্রাণ হারান পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানার কোরা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ক্ষিতীশ। বেশ কয়েক মাস আগে বীরভূমে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে ইলামবাজারের স্কুলবাগান সুভাষপল্লীতে স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, ভোটার তালিকা সংক্রান্ত আতঙ্কই তাঁকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

 

এরপর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের জয়পুর এলাকার যুবক সফিকুল গাজি (৩৫) এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। তাঁরা স্ত্রী জানান, গত কয়েক দিন ধরে আতঙ্কে ছিলেন স্বামী। বারবার বলছিলেন, তাঁর কোনও পরিচয়পত্র নেই। ভাই-বাপ কেউ নেই। স্ত্রী বারবার অভয় দেওয়ার চেষ্টা করলেও গত বুধবার সকালে তিনি নিজেকে শেষ করে দেন। 

 

এই আবহে বহরমপুর থানার অন্তর্গত গান্ধী কলোনী এলাকায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন এক ব্যবসায়ী। সেক্ষেত্রেও পরিবাররে দাবি ছিল, আত্মহত্যার কারণ এসআইআর আতঙ্ক। ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় ‘দেশ ছাড়তে হবে’ এই আতঙ্কে গত ৪ নভেম্বর কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন মুর্শিদাবাদের কান্দির মোহন শেখ (৫৫)।