আজকাল ওয়েবডেস্ক: কখনও খেতে খেতে, কখনও আবার হাসতে হাসতেই হঠাৎ শুরু হয়ে যায় হেঁচকি। একবার শুরু হলে যেন আর থামতেই চায় না! বাইরে মানুষের সামনে হলে তো আরও বিপত্তি। অনেকে ঠাট্টা করেও বলেন— “কারও নিশ্চয়ই মনে পড়েছে আপনাকে!” তবে মজার ছলে বলা হলেও, ঘন ঘন বা দীর্ঘ সময় ধরে হেঁচকি চলতে থাকলে সেটা কিন্তু যথেষ্ট অস্বস্তির এবং বিরক্তিকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াফ্রাম নামক পেশীর হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হয় হেঁচকি। সাধারণত এটি কয়েক মিনিটেই থেমে যায়, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু বাড়াবাড়িও করতে পারে। ওষুধ ছাড়াও হেঁচকি থামানোর জন্য বহু পুরনো কিছু ঘরোয়া উপায় বহুদিন ধরেই চালু রয়েছে বাঙালির ঘরে ঘরে।

১. এক চুমুক জল
হেঁচকি শুরু হলে প্রথমেই এক গ্লাস ঠান্ডা জল ছোট ছোট চুমুকে পান করতে পারেন। গলায় জল যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসনালীর মাংসপেশী স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে। কেউ কেউ বলেন, একবারে জল গিলে না খেয়ে বরং মুখ নিচের দিকে ঝুকিয়ে বারবার চুমুক দিয়ে খেলে আরও দ্রুত কাজ দেয়।

২. চিনি খাওয়ানো
এক চিমটে চিনি মুখে নিয়ে ধীরে ধীরে চুষে বা চিবিয়ে খান। মিষ্টির স্বাদ জিভে লাগলে মস্তিষ্কের স্নায়ু সচল হয়ে ওঠে ফলে ডায়াফ্রাম-এর রিফ্লেক্সে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। অনেকেই এই পদ্ধতি অনুসরণ করে দ্রুত উপকার পান।

৩. নিঃশ্বাস আটকে রাখা
গভীর শ্বাস নিয়ে তা কিছুক্ষণ আটকে রাখুন। প্রয়োজনে নাক চেপে ধরে রাখুন ১০–১৫ সেকেন্ড। এতে শরীরে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ সাময়িকভাবে বেড়ে যায়, যা ডায়াফ্রামকে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। তবে যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই পদ্ধতি অনুসরণ করলেই ভাল।

৪. লেবু ও আদার সংমিশ্রণ
এক টুকরো কাঁচা আদা বা অল্প লেবুর রস জিভে লাগালে অনেক সময় হেঁচকি বন্ধ হয়। আদার ঝাঁঝ বা লেবুর টক স্বাদ স্নায়ুতন্ত্রে ধাক্কা দেয়, যা হেঁচকির অস্বাভাবিক সংকোচনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অনেকেই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে বেশ উপকার পেয়েছেন।

কখন ডাক্তার দেখানো জরুরি?
হেঁচকি সাধারণত ক্ষণস্থায়ী হয়। তবে যদি কোনও হেঁচকি ৪৮ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়, ঘন ঘন পুনরাবৃত্তি ঘটে, কিংবা সঙ্গে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা গিলতে অসুবিধা হয়—তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ সেক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত কোনও স্নায়বিক বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যার থেকেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে।