সংবাদ সংস্থা মুম্বই: দক্ষিণী ছবির জনপ্রিয় নায়িকা প্রিয়া মোহন সম্প্রতি সমাজমাধ্যমের এক ভিডিওতে জানালেন, তাঁর দীর্ঘদিনের এক নিঃশব্দ লড়াইয়ের কথা।গত দেড় বছর ধরে তিনি লড়াই করছেন ফাইব্রোমায়ালজিয়া নামে এক জটিল অসুখের সঙ্গে। স্বামী নিহাল পিলাইয়ের সঙ্গে তাঁদের ইউটিউব চ্যানেল ‘অরু হ্যাপি ফ্যামিলি’-র ভিডিওয় নিজের যন্ত্রনার কথা ভাগ করে নেন প্রিয়া।

 

প্রিয়া বলেন, “শরীরের যন্ত্রণাটা এতটাই নিঃশব্দ ছিল শুরুতে যে, লোকজন ভাবত আমি অলস। কেউ বলত, ‘ও তো বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে।’ আমি নিজেও বুঝতে পারছিলাম না এটা এত বড় কিছু হবে। ধীরে ধীরে শরীরে ফুলে উঠতে লাগল চোখের চারপাশ, গাল… তবু চিকিৎসার জন্য সময় বের করতে পারিনি।”

 


আরও বলে চলেন তিনি “আমি এমন অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিলাম, যে বাচ্চাকে নিজে হাতে খাওয়াতেও পারতাম না। গাড়িতে উঠতে, বিছানা থেকে উঠতে, হাঁটতে— সব কিছুতেই অন্য কারও সাহায্য দরকার হতো। এতটাই দুর্বল ছিলাম যে এক গ্লাস জল পর্যন্ত তুলতে পারতাম না। কখনও কখনও মনে হতো, এমন জীবন নিয়ে বেঁচে আছি কেন?” এরপর নীহাল জানান, একবার বাথরুমে পড়ে গিয়ে উঠতেই পারছিলেন না প্রিয়া। সেখান থেকেই শুরু হয় চিকিৎসার পথ। অবসাদ, অনিদ্রা, ব্যথা আর অসহায়তায় জর্জরিত হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। দক্ষিণী অভিনেত্রীর এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই হাজারো অনুরাগী, দর্শক ও সহ-অভিনেতার কাছ থেকে ভেসে এসেছে ভালবাসা, শুভেচ্ছা আর উৎসাহ। প্রিয়ার সাহস ও খোলাখুলি স্বীকারোক্তি অনুপ্রাণিত করেছে অসংখ্য মানুষকে।

 

প্রিয়ার এই অসুখ— ফাইব্রোমায়ালজিয়া, এমন একটি অসুখ যার লক্ষণ বাইরে থেকে বোঝা যায় না। তাই একে বলা হয় ‘invisible illness’। এই অসুখে আক্রান্ত রোগীরা তীব্র পেশি ব্যথা, ক্লান্তি, ঘুমে ব্যাঘাত, মুড সুইংস, অবসাদ ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে যান। এ রোগের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে স্ট্রেস, হরমোনাল ইমব্যালান্স, ট্রমা ও জেনেটিক ফ্যাক্টর ভূমিকা নিতে পারে।কিন্তু শরীরে তীব্র যন্ত্রণা, ক্লান্তি, মানসিক অবসাদ— সবটাই ভেতর থেকে কুরে কুরে খায়। নিদান নেই, কেবল উপসর্গ কমানোই লক্ষ্য।

ভিডিও সামনে আসতেই হাজারো অনুরাগীর ভালবাসা ও সমর্থনে ভরে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। প্রিয়ার সাহসিকতায় মুগ্ধ নেটপাড়া।