কৌশিক রায়: ওরা সবাই প্রান্তিক সমাজের। হেসে খেলে বাঁচার স্বপ্ন ওদের কাছে এখনও পর্যন্ত স্বপ্নই। পাহাড়, সমুদ্র মানে কারও কাছে শুধুই ঢেউ, কারও কাছে রূপকথার জলপরী, কারও কাছে আবার নানা প্রজাতির মাছ। কেউই সামনাসামনি কোনওদিন সমুদ্র দেখেনি। জলের তলার সেই অজানা জগৎকে জানার সুযোগ করে দিতে ধাপা এলাকার ২৫ জন শিশুকে নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল আঁকা প্রতিযোগিতার। ভাবনা ছিল সামুদ্রিক জগৎ এবং সেখানকার প্রাণী। জানা গেল, কেউই সামনাসামনি সমুদ্র দর্শন করেনি। তাহলে ছবিতে ফুটিয়ে তুলবে কীভাবে? শিশুদেরই কথায়, "ম্যাম মোবাইল ফোনে আমাদের ছবি দেখিয়েছেন। সেই ছবিকেই মাথায় রেখে এঁকেছি আমরা।"
আয়োজক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক সদস্য জানালেন, "ওদের আমরা টিভি দেখাই, সমুদ্র সম্পর্কে পড়াশোনাও করাই। সেই ভাবনাকে মাথায় রেখেই ওরা ছবি এঁকেছে।" প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া সঞ্জনা দাসের কথায়, "সামনে থেকে কোনওদিন সমুদ্র তো দেখিনি। তবে টিভিতে কার্টুন দেখি, সেখানে সমুদ্র দেখায়। স্টারফিশ, জেলিফিশ, অক্টোপাস দেখতে পাই। ওগুলোই ভেবে ভেবে এঁকেছি।" মহম্মদ জিৎ আবার সমুদ্র বলতে বোঝে শুধু ঢেউ। তার আঁকা ছবিতেও শুধু নীল জল। ছোট্ট ঈশিকা আবার আক্ষেপের সুরে জানাল, "ম্যামের ফোনে সমুদ্র দেখে ছবি এঁকেছি। কিন্তু সামনাসামনি যদি একবার দেখতে পারতাম তাহলে আরও ভাল আঁকতে পারতাম। সামনে থেকে জেলিফিশ, স্টারফিশ দেখার খুব ইচ্ছে আমার।" শনিবার অ্যাক্রোপলিস মলে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। ২৫ জনের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী সোনালী চৌধুরী। তিনি বলেন, "সমুদ্রের জগৎ নিয়ে সবারই একটা উৎসাহ থাকে। কিন্তু সবার সেই অভিজ্ঞতা থাকে না। ছবির মাধ্যমে বাচ্চারা সেই অভিজ্ঞতার খানিকটা পেলেও সেটাই অনেক। চোখে মুখে ওদের আনন্দের ছাপটাই অনেক কিছু বলে দিচ্ছে।"