আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের প্রাক্তন উইকেট কিপার সৈয়দ কিরমানির প্রশংসায় ভারতের পেসার মহম্মদ সিরাজ।
কিরমানির আত্মজীবনী 'স্টাম্পড -বিহাইন্ড অ্যান্ড বিয়ন্ড দ্য টোয়েন্টি টু ইয়ার্ডস' প্রকাশিত হয়েছে ১০ আগস্ট। উইকেটের পিছনে কিরমানির ভূমিকার কথা প্রশংসা করে সিরাজ বলেছেন, ''১৯৮৩ সালে আপনারা যখন বিশ্বকাপ জিতেছিলেন, তখন আমরা কেউই জন্মগ্রহণ করিনি। এটা আপনার জীবনের প্রেরণাদায়ক এবং অনুপ্রেরণার এক গল্প। আমি অনেক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে শুনেছি, উইকেটের পিছনে আপনার ভূমিকা ছিল অসাধারণ। ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রতি আপনার এই অবদানের জন্য অনেক ধন্যবাদ।''
মহম্মদ সিরাজ ম্যাজিক দেখিয়েছেন ওভালে। হায়দরাবাদির আগুনে স্পেলে ভারত সিরিজে সমতা ফিরিয়ে এনেছে। চতুর্থ দিনে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ফেলেছিলেন সিরাজ। সমালোচনা ধেয়ে এসেছিল তাঁর দিকে। প্রাক্তনদের তীব্র সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন সিরাজ। সেই সিরাজ এদিন প্রায়শ্চিত্ত করলেন। ক্রিকেট বারবার সুযোগ দেয় না। এক বলের খেলা ক্রিকেট। সেখানে ক্রিকেট আরও একটা সুযোগ দিয়েছিল সিরাজকে। হায়দরাবাদি তারকা সেই সুযোগ দু'হাতে লুফে নেন। ওভালে নিজেকে নিংড়ে দিলেন। তিরিশ ওভার হাত ঘুরিয়ে পাঁচ-পাঁচটি উইকেট নিলেন। পঞ্চম দিনের শুরুতে উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সাজঘরে জোরালো ধাক্কা দিয়েছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের শেষটাও হল তাঁরই হাতে।
আরও পড়ুন: ১৯ বছরে ইতিহাস গড়লেন রাজস্থান রয়্যালসের তরুণ তারকা, শক্তিশালী এই দলের বিরুদ্ধে চালালেন ধ্বংসলীলা...
সেই সিরাজের প্রশংসা করে ৭৫ বছর বয়সী কিরমানি বলেছেন, ''তুমি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছো। আমার অভিনন্দন তোমাকে। তোমার উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে দেশকে গর্বিত করেছো। এই ধরনের আগ্রাসী মনোভাব সরাসরি আসে হৃদয় থেকে। আমি তোমার সাফল্য কামনা করি।'' পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ থেকে সিরাজের ঝুলিতে ২৩টি উইকেট। এহেন সিরাজ অগ্রজ উইকেট কিপারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন। সিরাজের কথা বলতে গেলেই ঘুরে ফিরে আসে ওভাল টেস্ট।
ওভালে জেতার জন্য ৩৫ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। ভারতের জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল চার-চারটি উইকেট। ভারতের সুযোগ কম। বরং ইংল্যান্ড অ্যাডভান্টেজে বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। কিন্তু মহম্মদ সিরাজ অন্যকিছু হয়তো ভেবে রেখেছিলেন। দিনটা তাঁর। ওভাল টেস্টে লেখা থাকবে তাঁর নাম। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা শুরুতেই রান দিয়ে দিলেন একগাদা। চাপ বাড়ল ভারতের উপরে। সিরাজ বল হাতে প্রথমে ফেরালেন স্মিথকে। তার পরে ওভারটন। অন্যদিকে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অ্যাটকিনসন। তিনি মারমুখী। এদিকে কৃষ্ণর ইয়র্কারে উইকেট ভাঙল টংয়ের। অ্যাটকিনসনের উইকেট ভেঙে ব্রিটিশ-ভূমে নতুন এক রূপকথা লিখলেন সিরাজ।
কাজটা খুবই কঠিন ছিল ভারতের জন্য। ২-১-এ পিছিয়ে থেকে ওভালে খেলতে এসেছিল শুভমান গিলের অপেক্ষাকৃত নবীন দল। তার উপরে মোক্ষম সময়ে সরে যান জশপ্রীত বুমরাহ। রক্তাল্পতা ভারতের বোলিং লাইন আপে। সেই বোলিংয়ের লাইটহাউজ একজনই। তিনি মহম্মদ সিরাজ। এই সিরিজ হেরে গেলে গৌতম গম্ভীরের উপরে প্রবল চাপ তৈরি হয়ে যেত। সিরাজ একইসঙ্গে ভারতকে সমতায় ফেরালেন, অন্যদিকে গম্ভীরকেও বিড়ম্বনার হাত থেকে বাঁচালেন। রানির দেশ থেকে সিরিজ ২-২ করে দেশে ফিরছে ভারত। তার পিছনে অবদান রয়েছে সিরাজের। সেই সিরাজ কিরমানির বই প্রকাশ করলেন। অগ্রজকে প্রশংসা করলেন এবং বিশ্বজয়ী দলের সদস্য কিরমানি যে অসংখ্য ক্রিকেটারদের প্রেরণা জুগিয়েছেন, সেই কথাও তুলে ধরেন মহম্মদ সিরাজ।
আরও পড়ুন: ফিফার জটিল নিয়মের জন্যই নাকি দিন দিন ব়্যাঙ্কিংয়ে পতন হচ্ছে ভারতের, দাবি করলেন কল্যাণ চৌবে...
