আজকাল ওয়েবডেস্ক: এশিয়া কাপের আগে বড় ধাক্কা খেল বিসিসিআই। জানা গিয়েছে, আসন্ন টুর্নামেন্টে কোনও স্পনসর ছাড়াই খেলতে নামতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট দল। ড্রিম ইলেভেনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বিসিসিআই দীর্ঘসময়ের চুক্তির পথে হাঁটতে চায়। বোর্ড চাইছে শুধুমাত্র এশিয়া কাপ নয়, বরং ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি স্পনসরশিপ চুক্তি করতে। তবে সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে সময় লাগবে। ফলে, এশিয়া কাপে হয়তো খালি জার্সি পরে মাঠে নামবেন রোহিত শর্মারা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের পাশ করা অনলাইন গেমিং বিল কার্যকর হওয়ার পরেই বড়সড় ধাক্কা আসে। নতুন আইনের জেরে অনলাইন গেমিং সংস্থা ড্রিম-ইলেভেন টিম ইন্ডিয়ার টাইটেল স্পনসরশিপ থেকে সরে দাঁড়ায়। বৃহস্পতিবার রাজীব শুক্লার নেতৃত্বে বিসিসিআইয়ের জরুরি অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠকে নতুন স্পনসর নিয়ে আলোচনা হলেও, সময় কম থাকায় এশিয়া কাপের আগে তা সম্ভব হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়া সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিসিসিআই কোনও গেমিং সংস্থার সঙ্গে স্পনসরশিপ চালিয়ে যেতে পারবে না। ড্রিম-ইলেভেনের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়েছে। আমরা নতুন স্পনসর খুঁজছি’। উল্লেখ্য, ড্রিম ইলেভেন এবং মাই-ইলেভেন সার্কেল মিলিয়ে দুই সংস্থা প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা বিসিসিআইয়ের রাজস্বে অবদান রাখে। বিশেষ করে ড্রিম-ইলেভেন ২০২৩-২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৫৮ কোটি টাকার (৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) চুক্তি করেছিল টিম ইন্ডিয়ার টাইটেল স্পনসর হিসেবে। কিন্তু নতুন আইনের কারণে অনলাইন ফ্যান্টাসি স্পোর্টস সংস্থাগুলির আয়ে বড়সড় ধাক্কা লেগেছে, আর তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সিতেও। এবারের এশিয়া কাপ শুরু হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। এক মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই দু’টি সংস্থা ভারতীয় দলের টাইটেল স্পনসর হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা টয়োটা মোটর কর্পোরেশন এবং একটি ফিনটেক স্টার্টআপ। তবে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।

ওই রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এশিয়া কাপের জন্য ড্রিম ইলেভেনের লোগো সহ টিম ইন্ডিয়ার জার্সি ছাপানো হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই জার্সি ব্যবহার করা হবে না বলে নিশ্চিত করেছে বিসিসিআই। অনলাইন গেমিং বিল অনুমোদন হওয়ায় বড় ধাক্কা খেয়েছে ড্রিম ইলেভেন। ২০২৩ সালে ৩৫৮ কোটি টাকার বিনিময়ে জাতীয় দলের জার্সি স্পনসর হয় ড্রিম ইলেভেন। ২১ আগস্ট অনলাইন গেমিং বিল অনুমোদিত হয়। আর তাতেই অনলাইন মানি গেমিং নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ায় ড্রিম ইলেভেন বড় সড় ধাক্কা খেয়েছে। ড্রিম ইলেভেনের ধাক্কা খাওয়া নতুন কোনও ঘটনা নয়। ভারত ক্রিকেট দলের জার্সি স্পনসর হওয়া একাধিক কোম্পানিকে আগে সরতে হয়েছে। সেই তালিকায় এবার যোগ হল ড্রিম ইলেভেন। বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের গত ৫টি জার্সি স্পনসরকেই সরতে হয়েছে। ড্রিম ইলেভেনের আগে ভারতের স্পনসর ছিল বাইজুস। ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত স্পনসর ছিল এই গোষ্ঠী। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড ১৫৮ কোটি টাকা বকেয়ার দাবিতে মামলা করে। যা এখনও বিচারাধীন। অতীত থেকে দেখা গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের টাইটেল স্পনসরগুলোর পরিণতি প্রায় একই।