আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর, কিংবা অফিসে বসে কাজ করতে করতেই হঠাৎ হঠাৎ মিষ্টি কিছু খেতে ইচ্ছে করে? চলতি ভাষায় একেই বলে সুইট ক্রেভিং।

সুইট ক্রেভিংস কেন হয়?
সুইট ক্রেভিং বা মিষ্টির প্রতি আকর্ষণ বেশ কয়েকটি শারীরিক ও মানসিক কারণের উপর নির্ভর করে। 
১. শরীরে শর্করার ঘাটতি
শরীর যখন দ্রুত শক্তির প্রয়োজন অনুভব করে, তখন শর্করার দরকার পড়ে। মিষ্টি খাবার শর্করার তাৎক্ষণিক উৎস। শর্করার মাধ্যমে আমাদের শরীর দ্রুত শক্তি পায়। ফলে কখনও কখনও আমাদের মিষ্টি খাওয়ার চাহিদা বেড়ে যায়।

২. মস্তিষ্কের সেরোটোনিন স্তরের বৃদ্ধি
সুইট ফুড বা মিষ্টি খাবার খাওয়া আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামক “সুখের হরমোন” এর নিঃসরণ বৃদ্ধি করে। সেরোটোনিন-এর প্রভাবে আমাদের মেজাজ ভাল হয় এবং মানসিক চাপ কমে। তাই মানসিক চাপ বা উদ্বেগের সময় মিষ্টির প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যেতে পারে।

৩. এন্ডরফিনের মুক্তি
মিষ্টি খাবার খাওয়ার পর মস্তিষ্কে এন্ডরফিন নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয়, যা আমাদের সুখের অনুভূতি দেয়। শরীর যখন এই হরমোনের অভাব বোধ করে, তখন মিষ্টি খাবারের প্রতি ঝোঁক তৈরি হতে পারে।

৪. অভ্যাস এবং পরিবেশ
কথায় বলে মানুষ অভ্যাসের দাস। কথাটা কিন্তু একেবারে ভুল নয়। শরীর যখন কোনও বিশেষ পরিস্থিতিতে (যেমন বাড়িতে বসে সিনেমা দেখার সময়) মিষ্টি খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন সেই পরিস্থিতি এলেই মিষ্টির প্রতি চাহিদা বেড়ে যায়।

মিষ্টি খাওয়া উচিত কি না?
১. স্বাস্থ্যগত দৃষ্টিকোণ
অতিরিক্ত মিষ্টি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত চিনি আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এবং ওজন বাড়ানোর মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই মিষ্টির প্রতি ক্রেভিং হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।

২. প্রাকৃতিক শর্করা
তবে যদি মিষ্টি খেতে খুব ইচ্ছা হয়, তাহলে প্রাকৃতিক শর্করা খাওয়া ভাল। অর্থাৎ খেতে হলে ফলমূল, মধু, অথবা দারুচিনি মুখে রাখতে পারেন। চাইলে স্বল্প পরিমাণে ডার্ক চকোলেটও খেতে পারেন। এই ধরনের খাবার খেলে অতিরিক্ত ক্যালোরি ও চিনি এড়ানো যায়।

৩. পুষ্টির ভারসাম্য
সুইট ক্রেভিংসের সময় শুধু মিষ্টিই খেতে হবে এমন কিন্তু নয়। চাইলে কাঠবাদাম, কাজু বাদাম, কিসমিসের মতো কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প খেতে পারেন। সুস্বাদুও হবে এবং পুষ্টিকরও হবে।