স্বাস্থ্যগুণে ডাবের জলের জুড়ি মেলা ভার। গরমে এক চুমুক ডাবের জল খেলেই স্বস্তি। জলের ঘাটতি পূরণ করার সঙ্গে সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক-সহ নানা খনিজে পরিপূর্ণ ডাবের জল। দেহে খনিজ পদার্থের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এই পানীয়। হাজারো উপকারিতার জন্য পুষ্টিবিদরা ডাবের জল খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু স্বাস্থ্যকর মনে হলেও অনেক ক্ষেত্রেই এই ডাবের জলে লুকিয়ে থাকতে পারে ভয়ঙ্কর রাসায়নিক পেস্টিসাইডের অবশিষ্টাংশ। সম্প্রতি ধরা পড়েছে এমনই ভিডিও। যা ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। 

সমাজ মাধ্যমে কত রকম দৃশ্য সামনে আসে। যা কখনও কখনও কৌতূহল বাড়ায়, আবার কখনও অনেক বাস্তব তথ্যও সামনে আনে। তেমনই একটি ভিডিও দেখে রীতিমতো চমকে গিয়েছেন নেটাগরিকরা। নিত্যদিন যে স্বাস্থ্যকর ভেবে যে ডাব খান আট থেকে আশি তাতেই নাকি মেশানো হচ্ছে ভেজাল! বিক্রেতারা ডাবের আকার বাড়াতে এবং দীর্ঘক্ষণ ডাব সতেজ রাখতে রাসায়নিক মেশাচ্ছেন। যদিও ভিডিওটি কোথাকার তা জানা যায়নি।

আরও পড়ুনঃ বেসিনের জেদি হলদে দাগ তুলতে নাজেহাল! বাড়িতে থাকা ২ জিনিসেই হবে নতুনের মতো চকচকে, রইল টিপস

প্রসঙ্গত, নারকেল চাষিরা ফলন বাড়াতে ও পোকামাকড় দূর করতে প্রায়ই মোনোক্রটোফস নামের একটি বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করেন। নিয়ম অনুযায়ী, পেস্টিসাইড প্রয়োগের অন্তত ৪৫ দিন পর নারকেল সংগ্রহ করা উচিত। কিন্তু অনেক কৃষক লাভের আশায় সেই সময়সীমা মানেন না। ফলে বাজারে যে নারকেল পাওয়া যায়, তার জলে থেকে যেতে পারে পেস্টিসাইডের ক্ষতিকর অংশ, যা নিয়মিত খেলে শরীরে নানা অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। 

উল্লেখ্য, ভেজালের সমস্যা সমাধানে কচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে। এম.এসসি. শিক্ষার্থী মনালি গোস্বামী ও নরেন্দ্রসিং রহুবা চুদাসামা, সহ-অধ্যাপক বিজয় রামের নির্দেশনায়, এই রাসায়নিক পরীক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। যার মাধ্যমে সহজেই নারকেল পেস্টিসাইডযুক্ত কিনা ধরা পড়বে। পরীক্ষাগারে ইতিমধ্যেই দেখা গেছে, লাল রঙে পরিবর্তিত হওয়া নমুনায় আসলেই কীটনাশকের উপস্থিতি রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই আবিষ্কারের ওপর ভিত্তি করে শীঘ্রই একটি টেস্ট কিট বাজারে আনা হবে। টেস্টটিউব আকারে পাওয়া যাবে এই কিট, যা ব্যবহার করে কৃষক, ব্যবসায়ী কিংবা সাধারণ ভোক্তা, সকলেই ডাবের জল খাঁটি কিনা যাচাই করতে পারবেন। গবেষকদের আশা, এই উদ্যোগ বাজারে বিষাক্ত নারকেল পৌঁছনো বন্ধ করবে এবং মানুষ আরও নিশ্চিন্তে স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে ডাবের পান করতে পারবেন।