ধূমপান শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর- একথা সকলেরই জানা। দীর্ঘদিন ধূমপান করলে ফুসফুসে টক্সিন জমে যায়, যা ক্রমশ শ্বাসকষ্ট, সিওপিডি, এমনকী ফুসফুসের ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে. ধূমপান ছেড়ে দিলে শরীর ধীরে ধীরে নিজেকে মেরামত করতে শুরু করে। বিশেষত ফুসফুসের ক্ষতি কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা সম্ভব। আর এই প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও কার্যকর করতে সাহায্য করতে পারে কিছু নির্দিষ্ট খাবার।
১. ব্রকলি ও অন্যান্য ক্রুসিফেরাস সবজিঃ ব্রকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি সবজিতে থাকে সালফোরাফেন নামক উপাদান। এটি ফুসফুসে জমে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক বার করতে সাহায্য করে। নিয়মিত এসব সবজি খেলে ফুসফুসের ডিটক্স প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।
২. বিট ও বেদানাঃ এই ফল ও সবজিতে রয়েছে প্রচুর নাইট্রেট, যা রক্তে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়ায়। ধূমপায়ীদের ফুসফুস সাধারণত দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অক্সিজেন শোষণের ক্ষমতা কমে যায়। বিট বা বেদানা নিয়মিত খেলে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যায় উপকার মিলতে পারে।
আরও পড়ুনঃ হু হু করে কমবে রক্তচাপ, দূরে থাকবে হৃদরোগ! ওষুধকেও হার মানাবে ছোট্ট এক গ্লাস এই সবজির রস
৩. গ্রিন টিঃ গ্রিন টিতে প্রচুর ক্যাটেচিন রয়েছে, যা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে। এটি ফুসফুসের প্রদাহ কমায় এবং ধূমপানের কারণে তৈরি হওয়া কোষের ক্ষতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে ফুসফুসের ক্যানসার ও সিওপিডি-র ঝুঁকি কমতে পারে।

৪. আপেল ও সাইট্রাস ফলঃ আপেলে পাওয়া যায় কুয়েরসেটিন, আর সাইট্রাস ফলে থাকে ভিটামিন সি। দুটোই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় এবং ফুসফুসকে সুরক্ষা দেয়। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর নিয়মিত আপেল ও সাইট্রাস জাতীয় ফল খেলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা অনেকটা উন্নত হয়।
৫. হলুদঃ হলুদের প্রধান উপাদান কারকিউমিন প্রদাহ কমাতে দারুণ কার্যকর। এটি শুধু শ্বাসনালীর প্রদাহ কমায় না, বরং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু মেরামতেও সাহায্য করে। রান্নায় হলুদ ব্যবহার বা দুধের সঙ্গে হলুদ খেলে উপকার মেলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপান ছেড়ে দেওয়া স্বাস্থ্য রক্ষার প্রথম পদক্ষেপ। তবে তার পরেও ফুসফুস পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। এই সময় সঠিক খাবার বেছে নেওয়া শরীরকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে। তবে মনে রাখা জরুরি, খাবার একা ধূমপানের সব ক্ষতি দূর করতে পারবে না। সঠিক জীবনধারা, ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং দূষণ এড়িয়ে চলা-সব মিলিয়েই ফুসফুসকে সুস্থ রাখা সম্ভব।
