আজকাল অল্পবয়সিরাও ব্লটিং বা পেটফাঁপার শিকার। পাচন প্রক্রিয়ায় গণ্ডগোলের সঙ্গে ব্লটিংয়ের সমস্যার যোগসূত্র রয়েছে। মূলত পেটে গ্যাস জমে গেলে বা পেট ফুলে গেলে ব্লটিং হয়। অনেকেই মনে করেন শুধু অস্বাস্থ্যকর বা অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত খাবার খেলে পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এই ধারণা ঠিক নয়। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরও অনেক সময় পেটে গ্যাস জমে যায়, অস্বস্তি হয়। নেপথ্যে থাকতে পারে বেশ কয়েকটি কারণ। যা উপেক্ষা করলে শারীরিক জটিলতা বাড়তে পারে। কেন স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও পেট ফাঁপে? আসুন জেনে নেওয়া প্রধান তিনটি কারণ-
১. খাদ্যাভ্যাসঃ অনেক স্বাস্থ্যকর খাবারে এমন উপাদান থাকে যা আমাদের শরীর পুরোপুরি ভাঙতে পারে না। যেমন দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে থাকা ল্যাকটোজ, ফল ও সবজিতে থাকা ফ্রুকটোজ বা ফ্রুকট্যানস, কৃত্রিম মিষ্টিকারক সারবিটল ইত্যাদি। এগুলো অন্ত্রে পৌঁছে ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ভেঙে যায় এবং গ্যাস তৈরি করে। ফলে খাবার স্বাস্থ্যকর হলেও পেট ফাঁপা দেখা দেয়।
আরও পড়ুনঃ শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়াই রুখে দেবে কিডনি স্টোন! গবেষণায় নতুন আশার আলো, কী কী জানা গেল
২. আইবিএস (ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রম) অথবা ফাংশনাল ডিসপেপসিয়াঃ যাদের অন্ত্র অতিরিক্ত সংবেদনশীল, তাদের সামান্য খাওয়ার পরও অস্বস্তি, বায়ু জমা ও পেট ফুলে ওঠে। আইবিএস বা ফাংশনাল ডিসপেপসিয়ার রোগীরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। অন্ত্রের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হলে বা ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হলে পেটের ফাঁপা ভাব আরও বাড়তে পারে।
৩. কোষ্ঠকাঠিন্যঃ যাদের নিয়মিত মল ত্যাগে সমস্যা রয়েছে, তাদের অন্ত্রে খাবার দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকে। ফলে ফাইবার ও অন্যান্য উপাদান বেশি সময় ফার্মেন্ট হয়ে গ্যাস তৈরি করে। এর ফলেই পেটে চাপ ও ফাঁপাভাব বেড়ে যায়।

প্রতিকার কী হতে পারে
• কোন খাবার খাওয়ার পর সমস্যা হচ্ছে তা খেয়াল রাখুন এবং প্রয়োজনে খাদ্যতালিকা থেকে কমিয়ে দেওয়া।
• ‘লো-ফোডম্যাপ’ ডায়েট অনুসরণ করলে অনেকের ক্ষেত্রে উপকার হয়।
• পর্যাপ্ত জল পান ও ফাইবার নিয়ন্ত্রিতভাবে খেতে হবে।
• ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাওয়া এবং একসঙ্গে অনেক খাওয়া চলবে না।
আরও পড়ুনঃ রাতে ঘুমনোর আগে শুয়ে শুয়ে রিল স্ক্রল করেন? শরীরকে ভিতর থেকে শেষ করছে এই অভ্যাস, বাঁচার উপায় কী
• নিয়মিত শরীরচর্চা, হাঁটা পেটফাঁপা কমাতে সাহায্য করে।
• স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অবসরে মন ভাল রাখার কাজ করুন।
সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বা পেটে তীব্র ব্যথা বা ওজন কমার মতো উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যকর খাবারও সকলের জন্য পুরোপুরি উপযোগী নয়। ব্যক্তিভেদে অন্ত্রের প্রতিক্রিয়া আলাদা হয়। তাই নিয়মিত ফাঁপা ভাব থাকলে খাবারের ধরন, জীবনযাপন ও হজম প্রক্রিয়া নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমেই এ সমস্যা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
