বইয়ে পড়া বা সায়েন্স ফিকশন ছবিতে দেখা ঘটনাগুলো যেন এবার বাস্তবে ঘটছে। পর্দায় দেখে আসা মস্তিষ্কে, বা হাতে মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দেওয়ার মতো বিষয়ে বাস্তবেও ঘটছে এখন! শুধু, ঘটছে বলা ভুল, বরং দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে তা।
জানা গিয়েছে, সুইডেনে আর চাবি বা আইডি কার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে না। বরং তার বদলে সুইডিশরা তাঁদের শরীরকেই ডিজিটাল আইডি বা ডিজিটাল চাবিতে পরিণত করেছেন। হ্যাঁ, একদমই তাই। হাজার হাজার সুইডিশরা তাঁদের ত্বকের নিচে মাইক্রোচিপ লাগিয়েছেন।
এই মাইক্রোচিপ সুইডিশরা তাঁদের হাতের ত্বকের নিচে লাগিয়েছেন। প্রায় ৬০০০ এর বেশি মানুষ এই মাইক্রোচিপ লাগিয়েছেন তাঁদের শরীরে। ফলে বর্তমানে তাঁদের শরীর ডিজিটাল চাবিতে পরিণত হয়েছে রোজকার কাজকর্মের জন্য। সেটা অফিসের এন্ট্রি হোক বা বাড়ির চাবি, বা অন্য কিছু। সবেতেই এখন তাঁরা চাবি বা আইডি কার্ডের বদলে, তাঁদের শরীরে থাকা মাইক্রোচিপ ব্যবহার করছেন।
এই মাইক্রোচিপটি একটি চালের সাইজের আরএফআইডি বা এনএফসি চিপ। এতে ব্যক্তিগত তথ্য সেভ করে রাখা যেতে পারে। এমনকী এটার সাহায্যে যোগাযোগও পর্যন্ত করা যাবে। কী এটুকু শুনেই অবাক হয়ে গিয়েছেন? তাহলে জানাই দরজা খোলা হোক, বা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা সবেতেই এই চিপ কাজ করবে। এমনকী আপনি যদি কারও সঙ্গে কোনও তথ্য বা ফোন নম্বর ভাগ করতে চান, তাতেও এই মাইক্রোচিপ সাহায্য করবে। কী করতে হবে তার জন্য আপনাকে? খালি হাত নাড়াতে হবে।
২০১৫ সালে এই মাইক্রোচিপের ব্যবহার শুরু করা হয় সুইডেনে। মূলত, টেকপ্রেমীরা এটিকে একটি মুভমেন্ট হিসেবে চালু করেছিলেন। তারপর থেকে এটা ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে।
বলাই বাহুল্য, বিজ্ঞানের এই দুর্দান্ত আবিষ্কার যেন মানুষ এবং ডিজিটাল মাধ্যমের মধ্যে এক সুনিবিড় বন্ধন তৈরি করল। দুইয়ের যোগাযোগ আরও বাড়াল। শরীর দিয়েই এবার সুইডিশরা সমস্ত যোগাযোগ করছে। তথ্য চুরি, তার নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুললেও, মানবদেহ যে সহজেই এমন দুর্দান্ত সমস্ত প্রযুক্তির সঙ্গে মিলেমিশে যেতে পারে সেটাও অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
তবে, এই প্রযুক্তি মূলত সুইডেনেই ব্যবহৃত হচ্ছে প্রবলভাবে। বিশ্বের বাকি প্রান্তে তেমনভাবে এর প্রচার বা ব্যবহার শুরু হয়নি। আগামীতে কী ঘটে, এই ট্রেন্ড গ্লোবাল হয় কিনা সেই দিকে নজর থাকবে।
