'রকি অর রানি কী প্রেম কাহানি' ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। আলিয়া ভাটের মায়ের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়কে। অন্যদিকে রণবীর সিংয়ের দাদুর ভূমিকায় অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্র। বলিউডের 'হি-ম্যান'-এর প্রয়াণে সেই ছবির শুটিংয়ের স্মৃতি হাতড়ালেন অভিনেত্রী।
ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর শুনে আজকাল ডট ইন-কে চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "শেষবার যখন ওঁকে দেখেছিলাম, তখন ওঁর যে শারীরিক অবস্থা ছিল, সেটাকে যে উনি অতিক্রম করে, অভিনয় করেছিলেন...। সারাদিন, রাত্রি পর্যন্ত কাজ করেছিলেন, সেই যে স্ট্যামিনা আমি দেখেছিলাম সেটা এই মাপের ডেডিকেটেড শিল্পী বলেই সম্ভব। বলা ভাল, ধর্মেন্দ্র বলেই সেটা সম্ভব। শটের মাঝে উনি চেয়ারে বসে আছেন চুপ করে, যখন শট হচ্ছে তখন উঠে দাঁড়িয়ে যা যা করার সেটা করছেন, শট দিচ্ছেন। শটের শেষে রেকর্ডিং দেখতেন মনিটরে বসে। যতক্ষণ না তৃপ্ত হতেন, ততক্ষণ উনি শট দিতেন। এমন নয় যে, আমার যেটুকু করার করে বাড়ি চলে যাই। আমি ওঁকে দেখতাম আর ভাবতাম, ওই বয়সে গেলে আমাদের ওরম স্ট্যামিনা থাকবে তো? অসম্ভব নিষ্ঠা ছিল ওঁর।"
'রকি অর রানি কী প্রেম কাহানি' ছবির সেটে কীভাবে আলাপ হয়েছিল দু'জনার? পিছু ফিরে দেখলে কোন স্মৃতি আজও টাটকা জানতে চাইলে অভিনেত্রী বলেন, "উনি জানতেন না আমি বাঙালি। আমি প্রথমে যখন ওঁর সঙ্গে গিয়ে কথা বলি, প্রণাম করি, উনি আমার হাত ধরে বলেন বাঙালি চোখ...। সেই সময় আমি চশমা পড়ে ছিলাম না শটের কারণে। আমায় দেখে ওঁর সেটাই প্রথম মন্তব্য ছিল। তারপর জানাই যে আমি সত্যিই বাঙালি। তখন উনি ওঁর যাঁরা বাঙালি বন্ধু ছিলেন, শক্তি সামন্ত থেকে শুরু করে সবার কথা বললেন। আমার হাত ধরেই কথা বলে গেলেন। ওঁর বাঙালি যোগ, বাঙালিদের প্রতি ওঁর যে বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে, এত বন্ধু তাঁর... সেগুলো জানালেন। আলিয়ার বিয়ের পর আমাদের যখন আবার শুটিং শুরু হল তখন উনি আমায় দেখে আর সুন্দর চোখ বলেননি, বলেন দুর্দান্ত ব্যক্তিত্ব। দেখা হলেই একটা সুন্দর হাসি দিতেন। চোখ দেখলে মনে হতো, বয়স হয়েছে, ছাপ পড়েছে। কিন্তু হাসিটা সেই একরকম চার্মিং।" চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় আরও যোগ করেন, বলেন, "আমি প্রথম ওঁর ছবি দেখেছিলাম শোলে। দেখেই মনে হয়েছিল কী সুন্দর দেখতে একটা লোক। সেই হাসিটা ওঁর শেষ অবধি থেকে।"
প্রসঙ্গত কিছুদিন আগে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ধর্মেন্দ্রকে। সেই সময় সলমন খান থেকে শাহরুখ খান, আরিয়ান সহ অনেকেই হাসপাতালে আসেন অভিনেতাকে দেখতে। সানি দেওলকেও গাড়িতে গম্ভীর মুখে ঢুকতে দেখা যায় হাসপাতালে। অভিনেতাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। সেই সময় রটে গিয়েছিল তাঁর মৃত্যুর খবর। তবে সেটাকে ভুল প্রমাণ করে বাড়ি ফেরেন তিনি। তার দুই সপ্তাহের মধ্যেই ঘটে গেল অঘটন। মৃত্যুকালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
এদিন তাঁর শেষকৃত্যে হেমা মালিনী, এষা দেওল, শাহরুখ খান, অমিতাভ বচ্চন, সলমন খান, প্রমুখ এসে পৌঁছন। শ্রদ্ধা জানান কাজল, করণ জোহররাও।
