আজকাল ওয়েবডেস্ক: একসময়, বাসনকোসন বলতে ছিল, মাটির হাঁড়ি, পিতলের থালা-বাটি। কিন্তু এখন সেই জায়গা নিয়ে নিয়েছে স্টিলের বাসন। রান্না হয়ে গিয়েছে। মনে হল পরে খাবেন। তাই গরম ভাত বা ডাল তুলে রাখলেন স্টিলের পাত্রে। কিংবা দই বা টকজাতীয় কিছু ভরে দিলেন স্টিলের কন্টেনারে। অনেকেই ভেবে নেন, স্টিল মানেই নিরাপদ। প্লাস্টিকের মতো ক্ষতিকারক নয়, কাঁচ বা সিরামিকের মতো ভাঙার ভয়ও নেই। কিন্তু জানেন কি, কিছু বিশেষ খাবার যদি স্টিলের পাত্রে বেশি ক্ষণ রাখা হয়, তা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টেনলেস স্টিল পাত্র দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য আদর্শ হলেও, সবসময় এর ব্যবহার চলে না। বিশেষ করে অম্লধর্মী বা লবণাক্ত খাবার দীর্ঘ সময় স্টিলের সংস্পর্শে থাকলে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটতে পারে। এতে স্টিলের উপাদান (যেমন- নিকেল বা ক্রোমিয়াম) খাবারে মিশে যেতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। কোন কোন খাবার স্টিলের বাসনে রাখবেন না?
 
 
 আরও পড়ুন: ‘ধরবে নাকি?’ পুরুষাঙ্গ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন প্রযোজক! টাকার বিনিময়ে সঙ্গমও করেন কামসূত্রের নায়িকা?
 
 আরও পড়ুন: অতিরিক্ত বীর্যপাতে মৃত্যু! শুক্রাণু দান করার নেশায় ডাক্তারি পড়ুয়ার করুণ পরিণতি জানলে চোখে জল আসবে
১. টকদই বা টক জাতীয় খাবার
 
 টক দই, টমেটোর কোনও পদ বা তেঁতুলের তৈরি আচার স্টিলের পাত্রে রাখা অনুচিত। টক খবরে যে অ্যাসিড থাকে সেই অ্যাসিডের সঙ্গে ধাতুর বিক্রিয়া শুরু হয়। এতে স্টিলের কিছু উপাদান দইয়ের স্বাদ, গন্ধ এবং পুষ্টিগুণ নষ্ট করতে পারে। একই সঙ্গে দেহে ধাতব বিষক্রিয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়।
২. লেবু জল বা ভিনিগারযুক্ত পদ
 
 লেবুর রসও অত্যন্ত অম্লধর্মী। স্টিলের পাত্রে এটি রাখলে অ্যাসিডের সঙ্গে স্টিলের বিক্রিয়া ঘটতে পারে। ফলে খাবারের স্বাদ বদলে যেতে পারে। আবার ত্বক ও পাকস্থলীর সমস্যা দেখা দিতে পারে। একই ঘটনা ঘটে ভিনিগার বা টক চাটনি রাখলেও।
৩. অতিরিক্ত নোনতা খাবার বা আচার
 
 আচার বানানো বা সংরক্ষণের সময় অনেকেই স্টিলের পাত্র ব্যবহার করেন। কিন্তু নুন, মশলা ও তেলের সংমিশ্রণে স্টিলের পাত্রে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হতে পারে। আচার টক ও লবণাক্ত হওয়ায় পাত্রের ধাতু গলে গিয়ে খাবারে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
 
 ৪. ফারমেন্টেড বা গাঁজন হওয়া খাবার
 
 ইডলি-ডোসার ব্যাটার কিংবা আঞ্চলিক গাঁজনজাত কোনও খাবার রাখতে অনেকেই স্টিলের পাত্র বেছে নেন। কিন্তু স্টিলের সঙ্গে ফারমেন্টেশনের সময়ে উৎপন্ন অ্যাসিড বিক্রিয়া করতে পারে। এর ফলে স্বাদ খারাপ হয়, সেই সঙ্গে হজমের গোলমালও দেখা যায়।
৫. রাতে রান্না করা ভাত বা ডাল
 
 রাতে রান্না করে সকালে খাওয়ার জন্য অনেকেই স্টিলের পাত্রে খাবার রেখে দেন। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ খাবার রাখলে আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রার পার্থক্যে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত ছড়ায়। এতে স্টিলের গায়ে জং বা ছোপ পড়তে পারে, আর খাবারও দূষিত হতে পারে।
তাহলে কোন পাত্রে রাখবেন?
 
 ১. টক বা লবণাক্ত খাবার সংরক্ষণের জন্য কাঁচের জার বা সেরামিক পাত্র সবচেয়ে উপযুক্ত।
 
 ২. গরম খাবার ঠান্ডা করে তবেই স্টিলের পাত্রে রাখুন।
 
 ৩. দীর্ঘক্ষণ ফ্রিজে রাখার সময় এয়ারটাইট কাচ বা বিপিএ-মুক্ত প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করুন।
সব মিলিয়ে স্টিলের বাসন যতই দামে সস্তা হোক না দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য সুবিধাজনক হোক না কেন, সব ধরনের খাবারের জন্য একেবারেই নিরাপদ নয়। তাই অভ্যাস বদলান, বুঝে-বুঝে পাত্র বাছুন।
